চট্টগ্রাম : বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের জন্য মালয়েশিয়ান ত্রাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাজিব বিন তান আবদুর রাজ্জাকের পাঠানো ত্রাণসামগ্রী নিজের নির্বাচনী এলাকার মানুষের মাঝে বিলি করে সমালোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী।
জানা গেছে, মালয়েশিয়ান ত্রাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাজিব বিন তান আবদুর রাজ্জাক প্রায় ৭০ কোটি টাকার ত্রাণসামগ্রী নিজাম উদ্দিন নদভীর এনজিও সংস্থা আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিতরণের জন্য পাঠান গত সপ্তাহে। সেখান থেকে কিছু কাপড়চোপড়, খাদ্য ও ওষুধ সামগ্রী কিনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলি করা হয় পুটিবিলা, কাঞ্চনাসহ সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার অন্তত ৫শ স্থানীয় নারী-পুরুষের মাঝে।
৩০ ও ৩১ আগস্ট এই ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী। অনুষ্ঠানে ত্রাণ প্রেরণকারী মালয়েশিয়ান মন্ত্রীর নাম ও ছবির উপরে হিউম্যানিটিরিয়ান এইড মিশন ফর রোহিঙ্গা ইন বাংলাদেশ সম্বলিত ব্যানারটির পাশে টানানো হয় সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের জনসাধারণের মাঝে ত্রাণবিতরণ কার্যক্রম লেখা ব্যানারটি।
ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর নাম লেখা হয়।
এই অবস্থা দেখে সচেতনদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে, কক্সবাজারের স্থায়ী-অস্থায়ী বিভিন্ন ক্যাম্পে মানবেতর জীবনযাপন করছে অন্তত ৫০ হাজার রোহিঙ্গা। সেখানে এই ত্রাণ না দিয়ে নিজ নির্বাচনী এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা কতটুকু ন্যায়সঙ্গত ও মানবিক তা বিবেচনার দাবি রাখে।
স্থানীয় সচেতনদের অভিমত, মানবতা ও ইসলামী চিন্তাবিদের আলখেল্লাপরা নদভী সাহেবদের কাছে প্রকৃতপক্ষে মানবতা বড় নয়, তাদের কাছে বড় হচ্ছে ক্ষমতা ও শক্তি। সুকৌশলে ক্ষমতায় আরোহণ করা নদভীরা ক্ষমতায় টিকে থাকা কিংবা ভোটের রাজনীতির জন্য এর চেয়ে নগ্ন ও জঘন্য আচরণ করলেও অবাক হবার কিছুই থাকবে না।
জানা গেছে, ডাকঢোল পিটিয়ে সাতকানিয়া লোহাগাড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫ শতাধিক নারী পুরুষ জড়ো করে দিনভর বসিয়ে রাখার পর পড়ন্তবেলায় জনপ্রতি ২শ’ টাকার মতো ত্রাণ হাতে ধরিয়ে দিয়ে বিদায় করে দেয়া হয়। বাড়ি ফেরার সময় তারা নদভীর পাশাপাশি সরকার ও সরকার প্রধানকে উদ্দেশ্য করে তির্যক বাক্য ছোড়েন, করেন গালমন্দ।
ত্রাণের স্বল্পতা ইস্যুতে নদভী নাকি স্থানীয়দের বুঝিয়েছেন প্রাপ্ত ত্রাণের সিংহভাগ অর্থ সরকারের পদস্থ ব্যক্তিদের কাছে পাঠিয়ে দিতে হওয়ায় এই স্বল্পতা সৃষ্টি হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের (মালয়েশিয়া) সাথে চুক্তি হয়েছে, ত্রাণের অর্ধেক পাবে রোহিঙ্গারা আর বাকি অর্ধেক আমরা (সাতকানিয়া-লোহাগাড়াবাসী)। এটা সরকারীভাবে অনুমোদন করা হয়েছে। এখন এটা নিয়েও অপরাজনীতি হচ্ছে।’