শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজ পবিত্র হজ

প্রকাশিতঃ ২০ অগাস্ট ২০১৮ | ১২:২৬ পূর্বাহ্ন

মিনায় হাজিদের সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে তাঁবুর শহর মিনা। গত শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত স্থল, নৌ ও আকাশপথে সৌদি আরবসহ বিশ্বের ১২২ দেশ থেকে ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৮২৬ হজযাত্রী চলতি বছর হজে অংশগ্রহণ করেছেন বলে সৌদি আরবের পরিসংখ্যান সংস্থার হিসাব অনুযায়ী জানা গেছে।

হাজিরা এ দিন বিকেল থেকে মিনার উদ্দেশে রওনা দেন। হাজিদের আরামের জন্য মিনায় তাঁবুতে ২১ হাজার এয়ারকন্ডিশন, ১০ হাজার স্প্রে ওয়াটার মিস্ট ফ্যান (কুয়াশা পাখা) স্থাপন করা হয়েছে। হাজিদের পরিবহনে ১৩ হাজার ৬৫০ ভেহিকেল, প্রযুক্তিগত সহায়তাদানে ৪২ গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।

রোববার রাতে মিনায় অবস্থান করবেন হাজিরা। সোমবার ফজর নামাজ আদায়ের পর তারা যাবেন মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত আরাফাত ময়দানের দিকে। তাদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের ময়দান। এ দিন দুপুর ১২টার পর মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা পাঠ করবেন মদিনা মসজিদে নববীর ইমাম ও খতিব ড. হোসাইন বিন আবদুল আজিজ আল শাইখ।

ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আরাফাত ময়দানে অবস্থানের পর মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই হাজিরা রওনা দেবেন ১৩ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে। সেখানে পৌঁছে এক সঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন তারা। খোলা আকাশের নিচে অবস্থানের পাশাপাশি প্রতীকী শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য কঙ্কর সংগ্রহ করবেন। এ বছর হাজিদের কষ্ট লাঘবে কর্মী বাহিনী দিয়ে পাথর সংগ্রহ করে হাজিদের সরবরাহ করবে সৌদি সরকার। এখানে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করবেন তারা। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে ফজরের নামাজ শেষে হাজিরা আবার ফিরে আসবেন মিনায়। আগামী বুধবার সকালে জামারাতে পাথর নিক্ষেপ ও পশু কোরবানির পর পুরুষরা মাথা মুন্ডন করে ইহরাম ত্যাগ করবেন। এরপর পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ করে হজের পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন হাজিরা। হজের অংশ হিসেবে হাজিরা মিনা, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা ও মক্কায় পাঁচ দিন অবস্থান করবেন।

হজ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু করতে সৌদি আরবের সরকার বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। বাদশাহ সালমানের উপদেষ্টা প্রিন্স খালিদ আল-ফয়সাল হজ ব্যবস্থাপনা তদারকি করছেন। হাজিদের ১৩৬ প্রকার সেবাদান করছেন সৌদি সরকারের ১৯টি সংস্থার তিন হাজার ১৪১ নারীসহ এক লাখ ৯২ হাজার ২৫৪ সদস্য। এ ছাড়া অগণিত রোবার স্কাউট ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী তাদের সহযোগিতা করছেন।

এ বছর সৌদি সরকারের আমন্ত্রণে হজের সংবাদ সংগ্রহের জন্য বিশ্বের ১৫১ মিডিয়া ২৭ আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের ৮০০ সংবাদকর্মী সৌদিতে কাজ করছেন। এ ছাড়া ৬টি চ্যানেল ১০ ভাষায় অফিসিয়াল ব্রডকাস্টিং করবে হজ বুলেটিন।

সৌদি আরবে বাংলাদেশ হজ মিশনের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর শুক্রবার শেষ ফ্লাইটসহ ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯৭ হজযাত্রী (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। বিমান বাংলাদশে এয়ারলাইনস হজযাত্রী পরিবহন শেষ করেছে ১৫ আগস্ট। সৌদি এয়ারলাইনস হজযাত্রী পরিবহন শেষ করেছে ১৭ আগস্ট। প্রতারিতদের চোখের জলে শেষ হয়েছে হজ ফ্লাইট।

বাংলাদেশের সরকারি হিসাবে ভিসা হয়নি ৬০৬ জনের আর ভিসা পেলেও এজেন্সির গাফিলতির কারণে টিকিট হয়নি ৬৮ জনের। চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে হজবঞ্চিত হলেন ৬৭৪ জন।

এদিকে, হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার পূর্বে শনিবার পর্যন্ত বার্ধক্য, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ৫১ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ৪২ পুরুষ ও ৯ নারী রয়েছে।