শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দ্বিগুণ হারে চাঁদা আদায় করছে কর্ণফুলীর বন্দর পুলিশ ফাঁড়ি!

প্রকাশিতঃ ৩ জুলাই ২০২০ | ১০:০৮ পূর্বাহ্ন


আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার আওতাধীন বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির নামে আগে প্রতি অটোরিকশা থেকে মাসে চাঁদা আদায় করা হতো ১৫০ টাকা। ফাঁড়ির নতুন ইনচার্জ আসার পর দ্বিগুণ হয়েছে চাঁদা। ভুক্তভোগী অটোচালকরা এ অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ উঠেছে, নিয়মিত চাঁদার টাকা না দিলে রিকুইজিশনের পাশাপাশি মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয় চালক ও মালিকদের। এভাবে প্রতি মাসে বন্দর সেন্টার এলাকায় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন থেকে মাসে আদায় করা হয় কয়েক লাখ টাকার চাঁদা। আর এই চাঁদা সংগ্রহের কাজে বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই চন্দন কুমার মজুমদার ও কনস্টেবল মনির নিয়োজিত রয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

অটোরিকশা চালক হাসান একুশে পত্রিকাকে বলেন, সেন্টার এলাকার চাঁন মিয়া ও আলীজা নামের অটোরিকশা চালকদের কথিত নেতা রয়েছেন। তারা অটোরিকশা থেকে মাসিক ৩০০ টাকা করে চাঁদা সংগ্রহ করে তা বন্দর ফাঁড়ির পুলিশকে দেয়।

সিএনজি অটোরিকশা চালক মালেক একুশে পত্রিকাকে বলেন, সিএনজি অটোরিকশা চালকদের কথিত সমিতির সভাপতি আলমগীর সেন্টার এলাকার প্রতিটি সিএনজি অটোরিকশা থেকে প্রতিবার যাত্রী উঠা-নামা করলে ২০ টাকা করে চাঁদা নিয়ে বন্দর পুলিশ ফাঁড়িকে দেয়। না দিলে সেন্টার এলাকায় গাড়ি গেলে ওরা বিভিন্নভাবে হয়রানি করে এবং গাড়িসহ বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির হাতে তুলে দেয়।

অটোরিকশা থেকে চাঁদা নেওয়া আলীজা ও চাঁন মিয়ার সঙ্গে কথা হয় একুশে পত্রিকার। দুইজনই অভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। তারা জানান, আগে প্রতি অটোরিকশায় ১৫০ টাকা করে নিয়ে বন্দর ফাঁড়িকে দিতো তারা। এখন নতুন এসআই আবদুর রহিম আসার পর ৩০০ টাকা করে দিতে হয়।

এভাবে দ্বিগুণ চাঁদা কেন দেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আলীজা ও চাঁন মিয়া বলেন, এটা পুলিশের কোটা। না দিলে গাড়ি তুলে নিয়ে যাবে, মামলা দেবে এবং বিভিন্নভাবে হয়রানি করবে। তাই সবাই জনে জনে না দিয়ে টাকাগুলো আমরা সংগ্রহ করে দিই পুলিশকে।

তবে সিএনজি চালকের কথিত সমিতির সভাপতি আলমগীর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি পুলিশের জন্য কোন চাঁদা আদায় করি না। আমাদের সমিতির জন্য টাকা তুলে আসছি।

যদিও ভুক্তভোগী সিএনজি অটোরিকশার চালকরা একুশে পত্রিকাকে জানিয়েছেন, তাদের কোন সমিতি নেই, যেখানে নিজেদের টাকা জমা হবে। চাঁদাগুলো তুলে তারা পুলিশকে নিয়ে ভাগ করে খাচ্ছে।

এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার আওতাধীন বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই চন্দন কুমার মজুমদার একুশে পত্রিকাকে বলেন, এসব আমি জানি না। আপনি এসআই আবদুর রহিমের সাথে কথা বলুন।

পরক্ষণে এএসআই চন্দন বলেন, এসব ওসি স্যারও অবগত আছেন। পরে এসআই আবদুর রহিমকে চন্দন কুমার ফোন দিলে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলিয়ে দেন। এ সময় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আবদুর রহিম বলেন, উপরে আমাদের একটা কোটা দিতে হয়। ফোনে এতসব বলা যাবে না। আপনি আমার সাথে যোগাযোগ করেন বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার মো. ইয়াসির আরাফাত একুশে পত্রিকাকে বলেন, এভাবে মাসিক চাঁদা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। ঘটনার সত্যতা পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।