শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডিএফপির হালচাল।। ২৬ বছরেও প্রকাশ না করে বহাল থাকে ‘দিনমান’

প্রকাশিতঃ ২৬ মে ২০১৬ | ১০:৩২ অপরাহ্ন

একুশে প্রতিবেদক

dfpচট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে দৈনিক ‘দিনমান’ নামে বাংলাভাষায় একটি পত্রিকার ছাড়পত্রের জন্য চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরে (ডিএফপি) পাঠানো হয় চলতি বছরের মে’র শুরুর দিকে। কিছুদিন পর ডিএফপি থেকে চিঠিতে জানানো হলো- পত্রিকাটির অনুকূলে ছাড়পত্র অন্য ব্যক্তির নামে দেওয়া হয়েছে, কাজেই নতুন করে নাম পাঠাতে। মাস খানেকের আনুষ্ঠানিকতা শেষে জেলা প্রশাসন থেকে পাঠানো হলো আরো পাঁচটি নতুন নাম। যথারীতি যাচাইবাছাই করে ডিএফপি জানালো- এই পাঁচটিরও ছাড়পত্র হয়ে গেছে এরমধ্যেই। এবার তৃতীয় উদ্যোগ। এই উদ্যোগে আরো ১০টি নাম দেয়া হলো মৌখিকভাবে। তা-ও নাই। মানে ‘ছাড়পত্র’ ক্যু হয়ে গেছে বহু আগেই।

সংশ্লিষ্টদের হয়রানি ও কষ্ট দেখে ডিএফপির কর্মকর্তার মায়া হলো। বললেন, এবার নতুন কোনো নাম না দিয়ে আগের পাঁচটি নামের আগে ‘আজকের’ শব্দটি উল্লেখ করে দিন। অতপর জেলা প্রশাসন থেকে আরেকটি চিঠি নিয়ে আসুন। ছাড়পত্র পেয়ে যাবেন। চতুর্থদফা উদ্যোগ এবং এ নিয়ে দৌড়ঝাঁপের ফাঁকেই চললো অনুসন্ধানটি।

সেই অনুসন্ধানে জানা গেলো, দৈনিক ‘দিনমান’ পত্রিকাটির প্রকাশক ঢাকার তাহমিনা বেগম নামের জনৈক মহিলা। ১৯৯১ সালে ঢাকা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পত্রিকাটির ছাড়পত্র নেন তিনি। ১৯৭৩ সালের ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধীকরণ) আইন অনুযায়ী ছাড়পত্র পাওয়ার একবছরের মধ্যে পত্রিকা যথাযথভাবে প্রকাশ করে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের নিবন্ধন শাখায় জমা দেয়া না হলে সংশ্লিষ্ট ছাড়পত্র আপনাআপনি বাতিল হয়ে যায়।

কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, প্রায় ২৬ বছর অতিবাহিত হতে চললেও পত্রিকাটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি। তবু তাহমিনা বেগমের অনুকূলে পত্রিকাটির ছাড়পত্র বহাল আছে। কেবল এই একটি পত্রিকাই নয়, দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার পত্রিকা রয়েছে যেগুলো বছরের পর বছর নামে-বেনামে ছাড়পত্র নিয়েই সার। প্রকাশের বালাই নেই, কিন্তু ছাড়পত্রও বাতিল হয় না।

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা নামে-বেনামে ছাড়পত্র নিয়ে প্রায় ৬ হাজার পত্রিকা প্রকাশ না করার বিষয়টি স্বীকার করলেও নির্দিষ্ট সময়ের পরও কী করে ‘ছাড়পত্র’ বহাল থাকে সে প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।