ফন্সীর মেয়র-প্রীতি!

চট্টগ্রাম : মনিবের স্নেহ ভাগাভাগি হওয়ায় একটু আগে পুরো বাংলোজুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছে, জনে জনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে যে কুকুর, সে কুকুরই হঠাৎ মেয়রের উপস্থিতিতে চুপচাপ, সুনশান নীরব।

শুধু তাই নয়, মেয়র যেখানে বসলেন সেখানে ছুটে গিয়ে আনুগত্য প্রকাশ করলেন, মেয়রের আদর নিলেন।

উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে দেখলেন সেই দৃশ্য। আর প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছিলেন এ কী করে সম্ভব?

সম্প্রতি বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নানের সরকারি বাংলোর বৈঠকখানায় ঈদের শুভেচ্ছা-বিনিময়ে শামিল হয়েছিলেন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। আড্ডা-আলোচনার এক ফাঁকে ব্যক্তিগত সচিবের শিশুকন্যাকে কোলে তুলে নেন বিভাগীয় কমিশনার। এতে কুকুরটি (নাম ফন্সী) যতটা না ঈর্ষান্বিত, তার চেয়ে অনেক বেশি ঈর্ষান্বিত হয়ে ওঠে বাচ্চাটি যখন বিভাগীয় কমিশনারের স্ত্রীর কোলে ওঠে।

মনিবের স্নেহ ভাগাভাগি কিছুতেই মানবে না পরিবারটির অপত্য স্নেহে বেড়ে ওঠা বিদেশি জাতের কুকুর ‘ফন্সী’।

তাই রীতিমতো হিংস্র্র হয়ে উঠে সে। চিৎকার, চেঁচামেচি করে পুরো বৈঠকখানায় তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে। রশির বাঁধনেও আটকানো যাচ্ছিল না তাকে, এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ছুটছিল। তার যত ক্ষোভ ঝারছিল বাচ্চাটির প্রতি। বাচ্চাটিকে বাবার কোলে নিয়ে যাওয়ার পরও শান্ত করা যাচ্ছিল না তাকে। বাচ্চাটির দিকে মুখ উচিয়ে অনবরত ঘেউ ঘেউ করছিল সে।

ফন্সীর এই কাণ্ডে অভ্যাগতদের চোখে-মুখে যখন উৎকণ্ঠা, তখনই ফন্সী ঘটালো আরেক কাণ্ড! যেই মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে দেখল, অমনিই শান্ত, সুবোধ বালক (!) সে।

একপর্যায়ে মেয়রের কাছে ছুটে যায় ফন্সী; মুখটা মেয়রের কোলে গুঁজে যেন মমতার ঘ্রাণ খুঁজছিল। মেয়রও নিরাশ করলেন না। ফন্সীকে আদর-মমতায় জড়িয়ে নিলেন। নিজের আঙুল দিয়ে ফন্সীকে খেলতে দিলেন।

মুহূর্তের মধ্যে ফন্সীর আচরণে এমন বৈপরীত্য দেখে উপস্থিত কেউ কেউ বলে ওঠলেন- মেয়রের ভাষা ফন্সী বোঝে, নাকি ফন্সীর ভাষা মেয়র বোঝেন!

আরেকজন বললেন, মেয়র মানুষকে বশ করেন জানি, প্রাণীকূলকে ‘বশ’ করার বিদ্যা কখন নিলেন!