শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘যে কোনো কাজে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি আদায় করে নিতেন জয়নুল আবেদীন’

প্রকাশিতঃ ২২ জানুয়ারী ২০২০ | ৩:২৯ অপরাহ্ন


চট্টগ্রাম: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোনো কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কেউ যখন সাহস করে বলতে পারতেন না, তখন মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীনের সহায়তা নিতেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমনভাবে পরিবেশন করতেন, তাতে সম্মতি আদায় করা যেত।

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি মেহেরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব মিয়া মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের নাগরিক শোকসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের বে টার্মিনাল প্রকল্প হাতে নেওয়ার জন্য আমি প্রচণ্ড পীড়াপীড়ি করছিলাম, পরে মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীনের সঙ্গে কথা বললাম। গত নির্বাচনের আগে তাঁকে আমি বললাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি বলেছি, আপনিও একটু বলুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন, তাহলে প্রকল্পটি গতি পাবে। যে কোন ভাবেই নির্বাচনের আগে যেন এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় এটির ব্যবস্থা করতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে আসার সুযোগ না পেলেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন জয়নুল আবেদীনের উদ্যোগের কারণে। আজকে বে টার্মিনালের কাজ শুরু হয়েছে। শুধু চট্টগ্রামের নয়, বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্প মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীনের কারণে গতি পেয়েছে।

তিনি বলেন, মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীন রাজনীতি করতেন না। কিন্তু তার গ্রামেরা বাড়ি, ঢাকার বাসায় কেউ গেলে দেখতে পেতেন একজন রাজনীতিবিদের বাড়িতে যেভাবে সকাল বেলা প্রচুর মানুষ দেখা করতে যায়, মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীনের ঢাকার বাসায়ও সে রকম মানুষের যাতায়াত ছিল। তার গ্রামের বাড়িতেও একইভাবে গণমানুষের যাতায়াত ছিল। রাজনীতি না করেও সারাজীবন তিনি দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। জয়নুল আবেদীনের হাত ধরে বহুজনের জীবনে পরিবর্তন এসেছে। বহুজন জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। অনেকের জীবনে আমূল পরিবর্তন এসেছে। তিনি মানুষের জন্য নিবৃত্তে কাজ করেছেন। সে কারণে তিনি আজকে এত জনপ্রিয়। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আজ হাজার হাজার মানুষের সমাগত হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার শতভাগ বিশ্বস্ত ছিলেন মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীন। যার কারণে তিনি যতবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ততবার তার কার্যালয়ের কর্তকর্তা হিসেবে, সামরিক সচিব হিসেবে তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছেন। সামরিক বাহিনীর মানুষকে তাদের পেশাগত প্রশিক্ষণের কারণেই তাদের আলাদা থাকতে হয়। মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীন সে দিক থেকে ব্যতিক্রম ছিলেন। একজন রাজনীতিবিদ যেভাবে মানুষকে আপন করে নেয়, তার চেয়েও বেশী আপন করে নিতে পারতেন মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীন। তিনি অত্যন্ত স্বল্পভাষী ছিলেন। তাকে উচ্চস্বরে কথা বলতে আমি কখনো দেখিনি। কারো সাথে রাগান্বিত হতে তাঁকে আমি দেখিনি। সে কারণে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন।

বিএনপি জনগণকে বিভ্রান্ত করছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গতকাল দেখলাম বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনে নাকি অনেকে ভোট দিয়েছে যারা বিদেশে থাকতেন, যারা মৃত, এ ধরনের মানুষ ভোট দিয়েছেন। আমি প্রশ্ন করতে চাই, চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় ভোটারের সংখ্যা প্রায় পৌনে ৪ লক্ষ। সেই পৌনে ৪ লক্ষ ভোটারের মধ্যে মাত্র ৩৬ হাজার ভোট পেয়েছেন। যদি ভোট কেন্দ্র দখল হতো, আর তার ভাষ্য অনুযায়ী এ ধরনের ভোটাররা যদি ভোট দিত তাহলে মোছলেম উদ্দিন এক-দেড় লক্ষ ভোট পেত। সুতরাং বলা যায়, এখানে পরিপূর্ণ সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে মোছলেম উদ্দিন জয়ী হয়েছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বিধায় ভোট প্রদানের হার ২৫ শতাংশের নিচে। অন্যথায় ভোট প্রদানের হার আরো অনেক বেশী হতো। এই ধরনের মিথ্যা ভাষণ দিয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়। এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্ত না করতে তাদের প্রতি অনুরোধ জানাবো। জনগণ আওয়ামী লীগের সাথে, শেখ হাসিনার সাথে।

শোকসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।