শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

গালওয়ান সংঘর্ষে ৭৬ ভারতীয় সেনা আহত, আটক ১০ জনকে ছেড়ে দিল চীন

প্রকাশিতঃ ১৯ জুন ২০২০ | ২:২৮ অপরাহ্ন


নয়াদিল্লি: পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের তিন দিন পর আটকে রাখা ১০ ভারতীয় সেনাকে ছেড়ে দিয়েছে চীন। কূটনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে দীর্ঘ আলোচনার পর দুই মেজরসহ ওই সেনা জওয়ানদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, কমপক্ষে দু’জন অফিসারসহ ১০ জন জওয়ান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার এপারে অর্থাৎ ভারতে ফিরে এসেছেন। তারপর তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে এবং তাঁদের বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন কর্মকর্তারা।

হিন্দুস্তান টাইমস আরও জানিয়েছে, গালওয়ানে সোমবার রাতের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার থেকে ভারতীয় এবং চীনা সেনাবাহিনীর মধ্যে মেজর জেনারেল পর্যায়ের বৈঠক হয়। গালওয়ান উপত্যকায় প্যাট্রোল পয়েন্ট ১৪’র কাছে তিন দফার বৈঠকে ১০ জন ভারতীয় জওয়ানকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবার তৃতীয়বারের জন্য বৈঠকে ভারতে প্রতিনিধিত্ব করেন কারুতে সদর দফতর থাকা ৩ ইনফ্র্যান্টি ডিভিশনের কমান্ডার মেজর জেনারেল অভিজিৎ বাপত।

ভারতীয় জওয়ানদের নিরাপত্তার খাতিরে সেই আলোচনা অত্যন্ত গোপনে অনুষ্ঠিত হয় বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তবে বিষয়টি নিয়ে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শুধু জানানো হয়, গালওয়ান সংঘর্ষে কোনও ভারতীয় জওয়ান নিখোঁজ নেই। কিছুক্ষণ পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও একই মন্তব্য করা হয়।

সোমবার গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের মধ্যে হওয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ২০ ভারতীয় সেনা নিহত ও ৭৬ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে নয়া দিল্লি। আহত সেনাদের মধ্যে ১৮ জন লেহ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, বাকি ৫৬ জনের চিকিৎসা চলছে অন্যান্য হাসপাতালে।

সংঘর্ষে চীনের হতাহতের সংখ্যাও ব্যাপক বলে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো দাবি করলেও বেইজিং এ বিষয়ে মুখ খোলেনি।

১৯৯৬ সালে হওয়া চুক্তিতে ভারত ও চীন লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ঘিরে একে অপরের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যবহার না করতে সম্মত হয়েছিল। সাড়ে চার দশক ধরে সীমান্তে দুই পক্ষের সেনাদের মধ্যে মারামারি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটলেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। উত্তেজনা প্রশমনে আলোচনার পাশাপাশি ভারত ও চীন লাদাখ সীমান্ত ঘিরে শক্তি বাড়াচ্ছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। গতকাল ভারতের বিমানবাহিনী ১২টি সুখোই ও ২১টি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান চেয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব জমা দিয়েছে। যা কিনতে খরচ হবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা।