বাজেট নিয়ে জনগণের মাঝে সীমাহীন হতাশা ও ক্ষোভ : ফখরুল


ঢাকা : ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি, এসএমই, গ্রামীণ অর্থনীতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জীবন-জীবিকা রক্ষায় প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছে। ফলে এ দেশের জনগণের মাঝে সীমাহীন হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের কারণে জনগণের কাছে দায়বদ্ধতাহীন একটি একদলীয় সরকারের আচরণে কাল্পনিক সাফল্যের দিবাস্বপ্ন দেখানোর অপপ্রয়াসই স্বাভাবিক।’

আজ বৃহস্পতিবার অনলাইন মাধ্যম জুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। এর আগে গতকাল বুধবার বিএনপির সংসদ সদস্যরা জাতীয় সংসদের সামনে বাজেট প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জনগণের কাছে ন্যূনতম জবাবদিহিতাহীন, আমলাচালিত, ক্রোনি ক্যাপিটালিস্ট সরকারের কাছে এমন বাজেটই প্রত্যাশিত। এই বাজেট আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এবারের বাজেট করোনার সময়ে বিভৎস স্বাস্থ্য সংকটে পড়া মানুষের নাভিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেওয়ার বাজেট। এটি করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া কোটি কোটি অনাহারী মানুষকে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ঠেলে দেওয়ার বাজেট। কৃষিকে ধ্বংস করে দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে ফেলার বাজেট। দেশের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার না করে আরো গভীর মন্দায় ফেলে দেওয়ার বাজেট, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙে ফেলার বাজেট।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে একটি লুটেরা আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চলেছে। এবারের বাজেটে লুটপাটকারী, ধনিকশ্রেণি ও আমলাতন্ত্রনির্ভর অর্থনৈতিক দর্শনের আলোকে প্রস্তুত হয়েছে এবং তাদেরই স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে।’

এ সময় করোনা চিকিৎসার কথা উল্লেখ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বলেছিল কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে সে একজন সরকারি রোগী। ধনী-গরিব নির্বিশেষে প্রত্যেককে বিনামূল্যে করোনা টেস্ট করা হবে। বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলোতে বিনামূল্যে পিসিআর পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে এ শর্তে যে, তারা রোগীদের কাছ থেকে কোনো ফি নেবে না। অথচ সংক্রমণ যখন বৃদ্ধি পেল, এমন এক মোক্ষম সময়ে এসে সরকার করোনা টেস্ট ফিস ২০০ ও ৫০০ টাকা নির্ধারণ করেছে। সরকার পরিচালনাধীন ল্যাবরেটরিতে এ জাতীয় ফি আদায় সারা বিশ্বেই বিরল।’

বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশই সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে করোনা পরিক্ষার জন্য কোনো ফি নেয় না। এমনকি নেপালে সরকারিভাবে পরীক্ষার ব্যয় বহন করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিটি করোনা টেস্টের জন্য নেপাল সরকারই সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা পরিশোধ করছে। অথচ আমাদের দেশে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা টেস্ট ব্যয় জনপ্রতি সাড়ে তিন হাজার টাকা, বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে সাড়ে চার হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। সরকার কী রকম অমানবিক এটি তার একটি উদাহরণ মাত্র।’