শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কায় করোনায় মৃত মুসলমানদের লাশ দাফনে বাধা

প্রকাশিতঃ ৬ জুলাই ২০২০ | ২:৩৫ অপরাহ্ন


শ্রীলঙ্কা : শ্রীলঙ্কায় করোনা রোগীদের দেহ পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মালবলম্বীদের লাশপোড়ানোয় ধর্মীয় বাধা না থাকলেও মুসলমানদের মৃতদেহ কবরস্থ করাই নিয়ম। কিন্তু করোনায় মৃতদের লাশ দাফন করা হবে নাকি পোড়ানো হবে, এই বিতর্কের কারণে বিপাকে পড়েছে দেশটির মুসলিমরা। এই বিষয়ে বিতর্কের অবসানে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই রায় দেবে আদালত। খবর বিবিসির।

করোনাভাইরাসের প্রভাব তেমন একটা পড়েনি শ্রীলঙ্কায়। এপর্যন্ত করোনায় মাত্র ১১ জন মারা গেছে দেশটিতে। সাবধানতা অবলম্বনে তাদের সবার মরদেহই পোড়ানো হয়েছে। তবে গত ৩১ মার্চ শ্রীলঙ্কায় করোনায় প্রথম একজন মুসলিমের মৃত্যুর পর স্থানীয় বেশ কিছু মিডিয়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়ানোর কারণ হিসেবে সরাসরি মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপরই দোষ চাপাচ্ছে।

শ্রীলঙ্কার মুসলমান সম্প্রদায়ের দাবি, করোনায় মৃত মুসলমানদর মরদেহ জোর করে পুড়িয়ে তাদের অধিকার নষ্ট করা হচ্ছে। এটা শ্রীলঙ্কায় মুসলমান নিপীড়নের নতুন উদাহরণ। অনেকেই মনে করছেন, গত বছরের এপ্রিলে কলম্বোর একাধিক চার্চ ও হোটেল ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই মুসলমানদের ওপর নিপীড়ন বেড়ে গেছে।

শ্রীলঙ্কান সরকারের প্রধান মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. সুগাথ সামারাভিরা বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্তসহ যারা সন্দেহজনকভাবে (উপসর্গযুক্ত) মারা গেছেন, তাদের সবার মরদেহই পোড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।কারণ করোনায় মৃতদের মরদেহ কবর দিলে তা ভূগর্ভস্থ পানিকে দূষিত করতে পারে।

এ বিষয়ে শ্রীলঙ্কা মুসলিম কংগ্রেস পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আলি জাহির মাওলানা বলেন, ‘করোনায় মৃতদের কবর দেওয়া জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর- এর উপযুক্ত প্রমাণ থাকলে সরকারের এই নীতি মেনে নেবে মুসলিম সম্প্রদায়।’ সরকারের এমন নীতির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার দাবি, সরকার এসবের মাধ্যমে মুসলমানদের নিয়ে ‘কালো রাজনৈতিক এজেন্ডা’ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। মুসলমানদের মরদেহ পোড়ানোর বিরুদ্ধে এরই মধ্যে শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল হয়েছে। আগামী ১৩ জুলাই এর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।