করোনা: ফুটপাতের মাংস কেনার ভিড়ে এবার নিম্ন মধ্যবিত্তরাও

চট্টগ্রাম : করোনার কারণে গত পাঁচ মাসে অসংখ্য মানুষ বেকার হয়েছে। শহরে বাসা ভাড়া দিতে না পেরে অনেকেই গ্রামে ফিরে গেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে এবার এসেছে কোরবানির ঈদ। বিবর্ণ এ ঈদে পশু কোরবানির বাসনা ও তৌফিক কমেছে অনেকেরই। তাই বলে অর্ধেকের কম দামে গরুর মাংস কেনার সুযোগ তো হাতছাড়া করা যায় না!

প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদের দিন বিকেলে কোরবানির পশুর মাংস বিক্রির জন্য নগরের বহদ্দারহাট, দেওয়ানহাট, মুরাদপুর, জিইসিসহ বিভিন্ন এলাকায় বসেছে ছোট ছোট হাট। বিভিন্ন বাসা বাড়ি থেকে পাওয়া মাংস বিক্রির জন্য এসব হাটে হাজির হন গরিব মানুষজন। আবার কোরবানির পশুর মাংস কেটে দিতে আসা মৌসুমি কসাইয়েরাও তাদের সংগ্রহ করা মাংসগুলো এসব হাটে এনে বিক্রি করেন।

বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, খাবারের হোটেলের মালিক, নিম্ন আয়ের মানুষ ও মেসে থাকা ব্যাচেলররা এসব গোশতের প্রধান ক্রেতা। কিন্তু করোনার এই সময়ে বহদ্দারহাটে ফুটপাতে কোরবানির এসব মাংস কেনার ভিড়ে দেখা গেছে পোশাক-আশাকে পরিপাটি নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষজনকেও। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের অনেকে এবার কোরবানি দিতে পারেননি। তবে এ নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী নয় তারা।

বিকেলে বহদ্দারহাটে গিয়ে আরও দেখা গেছে, ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা মূলত ভিক্ষুক এবং গরিব-অসহায় মানুষ। তারা বলেছেন, গত বছরগুলোর তুলনায় এবার বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে মাংস কম পেয়েছেন। যা পেয়েছেন তার কিছু অংশ রেখে বাকিগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন।

একজন মাংস বিক্রেতা বললেন, এসব মাংস রান্না করে খাওয়ার সামর্থ্য তাদের নেই। এর চেয়ে ২-৩ কেজি মাংস বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় সেটা দিয়ে কয়েকদিন সংসার চালানো যাবে।

এদিকে ঠিকমতো সংরক্ষণ না করায় এসব মাংসের মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কারণ সকাল থেকে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে ঘুরে এসব মাংস সংগ্রহ করে একত্র করেন মৌসুমি বিক্রেতারা। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও এগুলো সংরক্ষণে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সামর্থ্য তাদের নেই।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, ফুটপাতে বিক্রি হওয়া কোরবানি এসব মাংসে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। এসব মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। তাই মাংসগুলো কেনা পরিহার করা উচিত।