রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আ. লীগের উপ-কমিটি প্রস্তুত, ঘোষণা যে কোনও মুহূর্তে

প্রকাশিতঃ ২ ডিসেম্বর ২০২০ | ১১:০৪ অপরাহ্ন


জোবায়েদ ইবনে শাহাদত : সম্মেলনের ১১ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর ঘোষণা হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির তালিকা। উপ-কমিটি গঠনের শেষ সময় গত ১৫ সেপ্টেম্বর থাকলেও সেই সময়ের মধ্যে ১৭টি উপ-কমিটির মাত্র ৬টি উপ-কমিটির প্রস্তাবিত নাম জমা হয়েছিল।

তবে ব্যাপক যাচাই-বাছাই ও বিচার-বিশ্লেষণ শেষে আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই ঘোষণা হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় উপ-কমিটিগুলো- এমনটা জানিয়েছে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো।

একাধিক সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইতোমধ্যে অধিকাংশ সম্পাদকীয় বিভাগের চূড়ান্ত কমিটি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। জমা হওয়া উপ কমিটিগুলো ইতোমধ্যে তিনি দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠিয়েছেন। তিনি এখন চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই করছেন।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৫ এর ১ ধারার ‘ঝ’ ও ‘ঞ’ উপধারায় উপ-কমিটি গঠনের ক্ষমতা এবং তা তদারক ও সমন্বয়ের ক্ষমতা দলের সভাপতিকে দেওয়া হয়েছে। সদস্য সংখ্যাও তিনি নির্ধারণ করে দেবেন বলে উল্লেখ আছে দুটি উপধারায়।

তবে রীতি অনুযায়ী, দলের প্রতিটি বিষয়ভিত্তিক সম্পাদকরা উপ-কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে কমিটি গঠনের প্রস্তাব করে থাকেন এবং পরবর্তীতে তিনিই উপকমিটি পরিচালনা করেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি উপ-কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দেওয়া নির্দেশনায় বলেছিলেন, ‘যাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা সম্ভব হয়নি, প্রাক্তন ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ এবং যারা অন্য সহযোগী সংগঠনে নেই তাদেরই যেন উপ-কমিটিতে প্রধান্য দেওয়া হয়।’

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্পূর্ণ সভানেত্রীর নির্দেশনা ও তদারকিতে এবারের কমিটিগুলো হতে যাচ্ছে। উপ-কমিটিগুলোতে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে ছাত্রলীগের প্রাক্তন ও সদ্য সাবেক নেতাদের। আগের কমিটির কিছু সদস্যকেও এবারের কমিটিতে রাখা হয়েছে।

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কমিটিতে সংযুক্তদের ব্যাপারে বিভিন্ন দিক থেকে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, অভিযুক্তদের বিষয়ে কয়েক দফায় তদন্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

এদিকে, গত ৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রত্যেক সম্পাদকীয় বিভাগের উপ-কমিটিতে চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিব ছাড়া ৩৫ জন করে সদস্য রাখার কথা সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছিল।

কিন্তু ৩৫ জনের মধ্যে সীমিত থাকছে না সদস্য সংখ্যা। কিছু কমিটিতে সেই সংখ্যা বেড়ে ৪৫ জন থেকে ৫০ জন হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রক্তন ছাত্রলীগ নেতাদের এবারের কমিটিতে আমরা প্রেফার করেছি। এর পাশাপাশি এমন কয়েকজনও থাকছেন যারা আগেও উপ-কমিটিতে ছিলেন। বিস্তারিত তথ্য আপনারা কমিটি ঘোষণার পরই জানতে পারবেন।’

কবে নাগাদ কমিটির ঘোষণা আসতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যাচাই-বাছাই শেষে ৪৫ থেকে ৫০ জন করে সদস্য রেখে দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তিনি সেই কমিটিতে স্বাক্ষর করে সভানেত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’ আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে কমিটির ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন এই নেত্রী।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘যারা দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারদর্শী, যাদের নীতি-আদর্শ শতভাগ বিশুদ্ধ ও দলের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে তাদেরকেই আমরা সম্পৃক্ত করেছি। কমিটির অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী খুব শিগগিরই সকল উপ-কমিটি গঠন করা হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রনেতা, যারা এই কমিটির জন্য এলিজেবল কিন্তু এর আগে কোথাও সুযোগ পাননি তারা এবারের কমিটিতে চমক হিসেবে আসতে পারেন। তবে সভানেত্রীর নির্দেশনা যেহেতু আমাদের কাছে আইন, তাই তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে শেষ মুহূর্তে কী হচ্ছে।’

এই বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদের মোবাইল নাম্বারে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

কীভাবে এবারের উপ-কমিটি গঠন হচ্ছে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। যেহেতু দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই প্রক্রিয়ার সাথে সরাসরি জড়িত তাই আপনারা তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।’