ঢাকা : র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের যৌথ অভিযানে রাজধানীর কাফরুল এলাকা থেকে প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন শেখ হাবিবুর রহমান (৫৮), খলিলুর রহমান (৬২) ও আবু সাইদ (৫২)। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দুপুরে কাফরুল থানাধীন মিরপুর-১০-এর সেনপাড়া পর্বতা এসএসআই গ্রুপের অফিসে অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে ১৯৮ পিস ইয়াবা, পাঁচটি মোবাইল ফোনসেট, প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি চেক, এক লাখ টাকা, এনআইডি কার্ডের ২৫টি ফটোকপিসহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই সূত্র জানায়, শেখ হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কৌশলে প্রতারণা করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে প্রতারক শেখ হাবিবুর রহমানের এসব অপকর্ম গোয়েন্দা সংস্থার নজরে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৪-এর সদস্যরা বৃহস্পতিবার দুপুরে কাফরুল থানাধীন মিরপুর-১০-এর সেনপাড়া পর্বতা এসএসআই গ্রুপের অফিসে (তৃতীয় তলায়) অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করেন।
জানা যায়, হাবিবুর রহমানের বাড়ি বরিশালে, খলিলুর রহমানের বাড়ি মাদারীপুর ও আবু সাইদের বাড়ি চাঁদপুরে। গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্যরা একই সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের পরিচয় দিয়ে তাদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষের কাছে ভূয়া পরিচয় দিয়ে থাকে। মূলত এই প্রতারক চক্রের মূল হোতা শেখ হাবিবুর রহমান এসএসআই কর্পোরেশন নামে একটি সংস্থা খুলে চাকরি দেওয়া, জমি উদ্ধার, ফ্ল্যাট উদ্ধারের কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করে আসছে।
শেখ হাবিবুর রহমান সরকারের ঊঁচু মহলের আত্মীয় পরিচয়ে সম্প্রতি পুলিশের বিভিন্ন থানার ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানকে তদবির করেন। তার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। হাবিবের ছেলে শেখ ইমরানও বাবার হাত ধরে প্রতারণায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ ইমরানের স্ত্রী শারমিনও প্রতারক চক্রের সদস্য। একসময় তিনি গণভবনে কর্মরত ছিলেন। ইমরানের সঙ্গে বিয়ের পর স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে স্বামী ও শ্বশুরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণায় শারমিনও জড়িয়ে পড়েন বলে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে।