বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

চসিক: মানবিক সহায়তা বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিতঃ ৩০ জুলাই ২০২১ | ২:৪৭ অপরাহ্ন


জোবায়েদ ইবনে শাহাদত : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) কর্মহীন ও দু:স্থ ব্যক্তিদের মানবিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। সিটি করপোরেশনের বন্টন, সহায়তা প্রদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন, বিতরণসহ সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিয়েও উঠেছে অভিযোগ। এসব অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে চসিকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভিন্ন ভিন্ন ব্যখ্যা।

সম্প্রতি কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে কর্মহীন ও দু:স্থ ব্যক্তিদের মানবিক সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে চসিকের নিজস্ব তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। গত ১৪ জুলাই সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদন পাওয়ার পরদিন ১৫ জুলাই ৫৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হয় এই অর্থ- একুশে পত্রিকাকে এমনটাই জানিয়েছেন চসিকের হিসাব বিভাগের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (বিল শাখা) আশুতোষ দে।

কিন্তু ভিন্ন কথা বলছেন সিটি করপোরেশনের এক কাউন্সিলর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘কতজনকে ত্রাণ-অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে তা সিটি করপোরেশন থেকেই আমাদের নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কতজন মানুষ ত্রাণ-অর্থ সহায়তা পাবেন তা ওয়ার্ডের জনসংখ্যার আনুপাতিক হার অনুযায়ী নির্ধারণ করে দেয় কর্পোরেশন। যদিও চসিকের বেঁধে দেওয়া সংখ্যার চেয়ে আরো বেশি মানুষের সহায়তার প্রয়োজন হয়।’

অভিযোগ আছে, কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ না করেই, যাচাই-বাছাই ছাড়াই যেনতেন ভাবে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা। তবে চসিকের হিসাব বিভাগের (অডিট ও বাজেট শাখা) অতিরিক্ত প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ন কবির চৌধুরী একুশে পত্রিকাকে জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী ত্রাণ-অর্থ সহায়তা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে চসিক। যদিও সিটি করপোরেশনের বিগত ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের পর্যালোচনা করে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গাইডলাইনের ছিটেফোঁটাও অনুসরণ করছে না চসিক।

নিয়ম অনুযায়ী, মানবিক সহায়তা কর্মসূচির কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সহায়তা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি, মাইকিং ও অন্যান্য সহজলভ্য প্রচার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করে নির্ধারিত দিনে ও নির্ধারিত স্থানে প্রকাশ্য সভায় যাচাই বাছাই করে দুস্থ, অতি দরিদ্র ব্যক্তি-পরিবারের খসড়া অগ্রাধিকার তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। অযােগ্য ব্যক্তি-পরিবারের নাম সন্নিবেশিত হয়ে থাকলে কিংবা যােগ্য ব্যক্তি-পরিবারের নাম বাদ পড়ে থাকলে সে বিষয়ে আপত্তি দাখিলের জন্য তালিকার কপি সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কার্যালয়ের নােটিশ বাের্ডসহ অন্যান্য উপযুক্ত স্থানে কমপক্ষে এক সপ্তাহকাল টাঙিয়ে প্রচার করতে হবে।

প্রচার করার দিন হতে ১০ দিনের মধ্যে তালিকার বিরুদ্ধে কোন আপত্তি পাওয়া না গেলে তা গ্রহণ এবং নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির নিকট প্রেরণের মাধ্যমে বরাদ্দপ্রাপ্ত অর্থ, খাদ্যশস্য ও অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করতে হবে। বিতরণের সমন্বিত মাস্টাররােল প্রস্তুত করে এর প্রতিবেদন এবং কার্যক্রম চলাকালে অগ্রগতি পর্যালােচনাৰ্থে প্রতি মাসে ১টি সভায় মিলিত হওয়া ও মানবিক সহায়তা কর্মসূচির মাসিক অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রস্তুত করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করতে হবে।

এছাড়া, মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা ২০১২-২০১৩ অনুসরণ করে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার কথা থাকলে কোভিড পরিস্থিতির শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি চসিক। মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে চসিকে।

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর, জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনােনীত ১ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনােনীত স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তি (১ জন পুরুষ ও ১ জন মহিলা), সিটি করপােরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক মনােনীত ১ জন ধর্মীয় নেতা (ইমাম, পুরােহিত, গীর্জার সদস্য বা প্রধান) ও ওয়ার্ড এলাকায় কর্মরত এনজিওকর্মী নিয়ে সিটি করপােরেশন ওয়ার্ড মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করার কথা।

উল্লেখিত নিয়ম অনুসরণ না করেই, যাচাই-বাছাই ছাড়াই যেনতেন ভাবে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রত্যেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের চাহিদা অনুযায়ী ত্রাণ ও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হলেও সহায়তা প্রাপ্তদের কোনো তালিকা চসিকের কাছে দেওয়া হয় না। মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির বদলে চসিকের মেয়রকে প্রধান অতিথি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে সভাপতি করেই অনেকটা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের কায়দায় পরিচালিত হয় এই কার্যক্রম।

এদিকে কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহন শ্রমিক, দু:স্থ-অসহায় ও কর্মহীন মানুষের সহায়তায় জন্য যে ৫০ লাখ টাকা চসিকের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়, তা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নগরের শখানেক পরিবহন শ্রমিকের সঙ্গে কথা হলে তারা অভিযোগ করেছেন, কোভিড পরিস্থিতির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চসিকের কোন সহায়তাই তাদের কাছে পৌঁছায়নি।

৩৩৩ নম্বরে ফোন করলে মানবিক সহায়তা পাওয়ার যােগ্য ব্যক্তিদেরকে এ বরাদ্দ হতে খাদ্য সহায়তা (চাল, ডাল, লবণ, তেল, আলু ইত্যাদি) প্রদান নিয়েও রয়েছে অভিযোগ-অসন্তোষ। জামালখান ওয়ার্ড বাসিন্দা ষাটোর্ধ বৃদ্ধা সালেহা খাতুন অভিযোগ করে একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘টিভিতে দেখেছি ৩৩৩ নাম্বারে কল দিলে নাকি খাবার দিবে। কতবার যে কল দিয়েছি, কথা বলতে পারিনি। যেখানে সহায়তাই চাইতে পারিনি সেখানে সহায়তা পাবো কীভাবে?’

একই অভিযোগ করেন মুনিরনগর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চন্দন দাশ। একুশে পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এই লকডাউনে কত বেলা যে না খেয়ে কাটিয়েছি তা কেবল আমিই জানি। কিছু সাহায্য পাওয়ার আশায় গত ১৭ জুলাই ৩৩৩ নাম্বারে কল করেছিলাম প্রথমে কোনোভাবেই সংযোগ পাইনি। পরে যাও সংযোগ পেলাম তারা আমার নাম ঠিকানা নিলো, সারাদিন অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু কিছুই পেলাম না।’

এদিকে, এক দিনের ব্যবধানে দুই দফায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ও ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছে চসিক। তবে পূর্বের প্রশ্নবিদ্ধ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের কারণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে চসিকের পাওয়া আর্থিক বরাদ্দের স্বচ্ছতা ও সরকারি প্রচেষ্টার সফলতা অর্জন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে গত ৪ জুলাই ৫০ লাখ (চেক নং- ৭৫৩৩০৪১) এবং ১২ জুলাই ৫০ লাখ (চেক নং- ৭৫৩৩০৪২) টাকা নগদ অর্থ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অনুকুলে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সজীব কুমার চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সোমবার (২৬ জুলাই) বিষয়টি সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরকে জানানো হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে দেওয়া এসব বরাদ্দে সিটি করপোরেশনকে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়। এগুলো হলো, বরাদ্দকৃত ত্রাণ কার্য (নগদ) অর্থ কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহন শ্রমিকসহ কর্মহীন ও দু:স্থ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার প্রদানপূর্বক মানবিক সহায়তা হিসেবে বিতরণ করা, ৩৩৩ নম্বরে ফোন করলে মানবিক সহায়তা পাওয়ার যােগ্য ব্যক্তিদেরকে এ বরাদ্দ হতে খাদ্য সহায়তা (চাল, ডাল, লবণ, তেল, আলু ইত্যাদি) প্রদান এবং মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা ২০১২-২০১৩ অনুসরণপূর্বক যথানিয়মে করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়।

তবে বরাদ্দকৃত অর্থ নিয়ে ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু জটিলতা। দু:স্থ ব্যক্তিদের মানবিক সহায়তার উদ্দেশ্যে এই অর্থ বরাদ্দের ৪ দিন পার হয়ে গেলেও চসিকের গাফিলতির কারণে সেই অর্থ যোগ হয়নি সংস্থাটির কোষাগারে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, সোনালী ব্যাংকে নতুন একটি একাউন্ট খোলার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের কথা থাকলেও এসব অনুসরণ না করার কারণেই এই জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে সংস্থাটিকে।

এর আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ২০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ পায় সিটি কর্পোরেশন। রোববার (২৫ জুলাই) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ত্রাণ-১) মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বরাদ্দের বিষয়টি জানানো হয় চসিক ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরকে। চসিক বলছে, বরাদ্দকৃত ১০০ মেট্রিক টন চাল বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) গ্রহণ করে তা সচিবের তত্ত্বাবধানে ৫৫ জন কাউন্সিলরের অনুকূলে উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে বরাদ্দের ২০ লাখ টাকা এখনো বুঝে পায়নি সংস্থাটি।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের কর্মকর্তারা জানান, বরাদ্দের আগে থেকেই নিজ উদ্যোগে মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে সংস্থাটি। তবে ৪ দিন পার হয়ে গেলেও বরাদ্দকৃত অর্থের চেক কেন তুলতে পারেনি চসিকের হিসাব বিভাগ- এসবের প্রশ্নের সুস্পষ্ট জবাব দিতে না পারলেও চসিকের এক বিভাগের দেওয়া তথ্যকে অসত্য ও সরকারবিরোধী কার্যকলাপ বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন অন্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) অতিরিক্ত প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ন কবির চৌধুরী একুশে পত্রিকাকে বলেন, আমাদের ত্রাণ কার্যক্রম অনেক আগে থেকেই চলমান। ৩৩৩ নাম্বারে যারা কল করছে তারা তাৎক্ষণিক সহায়তা পাচ্ছে। ৩৩৩-তে যেখানে আগে ১টি নাম্বারে যোগাযোগ করা যেতো সহয়তার পরিধি বাড়াতে সেখানে আমরা ৩টি নাম্বার সংযুক্ত করেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৪১ টি ওয়ার্ডের ৫৫ জন কাউন্সিলরের মাধ্যমে এসব কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করছি। নির্দিষ্ট কোনো কমিউনিটির জন্য আমরা আলাদা করে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছি না। প্রান্তিক লেভেলের সকল মানুষকে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে আমাদের ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছি। আর পরিবহন শ্রমিকরা এই সহায়তা থেকে বাদ যাবে এমনটা হওয়ার কথা নয়।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ১ কোটি টাকার চেকগুলো আমরা এখনও তুলতে পারিনি। তবে এগুলো ক্লিয়ারিংয়ের জন্য দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সোনালী ব্যাংক এন এ চৌধুরী শাখায় একটি একাউন্ট খুলে নিয়ম অনুসরণ করছি। আশা করছি, রোববার সব প্রসেস শেষে টাকাগুলো চসিকের কোষাগারে জমা হবে।’

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সচিব খালেদ মাহমুদ একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে আমাদের ত্রাণ কার্যক্রম চলছে। পরিবহন শ্রমিকদেরও চসিক থেকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’ পরিবহন শ্রমিকদের কোন সংগঠন এই সহায়তা পেয়েছে, যারা পেয়েছে তাদের তালিকা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা মেয়র মহোদয়ের পিএস জানেন। এই সহায়তার তালিকা আমরা এখনো হাতে পাইনি।’

চেক জটিলতার বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এ কর্মকর্তা। বলেন, ‘সরকারের অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার আগেই চসিকের নিজস্ব তহবিল থেকে আমরা এই টাকা খরচ করে ফেলেছি। বরাদ্দের জন্য আমরা অপেক্ষা করিনি। আর চেকগুলো আমাদের আজকেই তুলতে হবে এমন কোনো কথা নেই। এখন চেক নিয়ে জটিলতায় আছি, এসব বাজে কথা কে বলে আপনাদের? যে বলে তাকে কানে ধরে আমার কাছে নিয়ে আসেন।’ যোগ করেন চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দের বিষয়টা আমি জানি। আজ আমরা এই চালগুলো বুঝে পেয়েছি, সাথে সাথেই প্রতিটি ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে এগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে কি না তা আমরা জানা নেই। বরাদ্দের টাকাও তো আমাদের কাছে আসেনি ‘

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। অন্যদিকে একাধিকবার ফোন করেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। প্রত্যেকবারই তিনি ফোন কেটে দেন।