সভা-সমাবেশ বন্ধের সুপারিশ কারিগরি কমিটির


ঢাকা : দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবধরনের সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধের সুপারিশ করেছে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ বাস্তবায়নে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনারও সুপারিশ করেছে কমিটি।

শুক্রবার রাতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটির ৫০তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় নিম্নলিখিত সুপারিশগুলো নেওয়া হয়েছে-

১. পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ সারাবিশ্বে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। সভা আবার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি উক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে। প্রয়োজনে কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণের জন্য আইনি ব্যবস্থা যেমন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পরামর্শ দেয় কমিটি। শতভাগ সঠিকভাবে মাস্ক পরা নিশ্চিত করা, হাত পরিষ্কার রাখা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য সবধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে সকল সামাজিক (বিয়ের অনুষ্ঠান, মেলা ইত্যাদি) ধর্মীয় (ওয়াজ মাহফিল) ও রাজনৈতিক সমাবেশ এই সময় বন্ধ করতে হবে। সভা/কর্মশালার ব্যবস্থা অনলাইনে করা প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ ও নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংক্রমণের বিষয়ে নিয়মিত নজরদারির বিষয়ে পরামর্শক কমিটি গুরুত্বারোপ করে।

২. শিক্ষার্থীসহ সবাইকে দ্রুত ভ্যাকসিনের আওতায় আসতে হবে।

৩. সব পয়েন্ট অফ এন্ট্রিতে স্কিনিং, কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন আরও জোরদারকরণে সুপারিশ করা হয়।

৪. সংক্রমণ বেড়ে গেলে তা মোকাবেলায় হাসপাতাল প্রস্তুতি বিশেষ করে পর্যাপ্ত সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দেয় কমিটি।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসার পর গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহতভাবে সংক্রমণ বাড়ছে। ইতিমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় আবিষ্কৃত করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে। ওমিক্রন এখনো দেশে ভয়াবহ রূপ ধারণ না করলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্যারিয়েন্টটি ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে।

সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে করোনা বিধিনিষেধ জারি করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবারও জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং টিকাকরণের আওতায় আসার পরামর্শ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।