১৪৪ ধারা দিয়ে লাভ হবে না, আন্দোলন চলবে : আমির খসরু


ব্রাহ্মণবাড়িয়া : প্রশাসনের ১৪৪ ধারার মধ্যেই দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সমাবেশ করেছে বিএনপি। সেই সমাবেশে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘১৪৪ ধারা দিয়ে লাভ হবে না। ধারার সময় শেষ হয়ে গেছে। অন্যান্য জায়গার মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও ধারা দিয়ে কাজ হয়নি। আন্দোলন চলছে, চলবে।’

শনিবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বটতলী বাজারে সমাবেশে খসরু বলেন, ‘জোয়ার শুরু হলে বাঁধ দিয়ে রাখা যায় না।’

এতে সংরক্ষিত নারী আসনের বিএনপির সাংসদ ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সরকার পতনের আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরে জেলা প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারার বাধা ডিঙিয়ে সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বটতলী বাজারে সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আমার যে ভাইয়ের ওপর অত্যাচার হয়েছে, যে পরিবারের ওপর অত্যাচার হয়েছে, যে মা তার সন্তান হারিয়েছেন, যে বোন তার স্বামী হারিয়েছেন, তার একটা একটা করে হিসাব আমরা নেব। আপনারা আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। আমরা একসঙ্গে, একযোগে এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটি থেকে সরকার পতনের আন্দোলনের ঘোষণা দিচ্ছি। আপনারা আমাদের হাত শক্তিশালী করবেন।’

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বেগম জিয়া নিজের পায়ে হেঁটে কারাগারে গেছেন। এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন না। এর দায় সরকারকে নিতে হবে। খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা কেন করা হচ্ছে না? সরকারকে এর জবাব দিতে হবে। সরকার মনে করে, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেলে, সরকারের অনেক কিছু বের হয়ে আসবে। সরকারের অনেক ভয়। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ভয়। তারেক রহমানকে ভয়। অনেককে ভয় সরকারের। এই কারণে তাকে (খালেদা জিয়া) ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঢেলে দিচ্ছে সরকার।’

রুমিন ফারহানা আরও বলেন, ‘আমার ভাইয়েরা, আপনারা জেগে উঠেছেন, আমি দেখতে পাই। যত দূর চোখ যায়, শুধু বিএনপির নেতাকর্মী, বিএনপির নেতাকর্মী। তারা পুলিশকে ভয় পান না, প্রশাসনকেও ভয় পান না। আমরা যারা ঢাকা থেকে এসেছি, রাস্তায় রাস্তায় আমাদের গাড়ি থামিয়েছে পুলিশ। গতকাল আমাদের নেতা–কর্মীদের তারা গ্রেপ্তার করেছে। কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তারা তল্লাশি চালিয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের কোনোভাবেই দমাতে পারেনি।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি শেখ হাসিনাকে বলব, জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া তো ক্ষমতায় আছেন। এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটি দেখে যান। আমার কোটি কোটি ভাইয়ের সমর্থন দেখে যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া তো সেই মাটি, যেখানে মোরগও লড়াই করে বেঁচে থাকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সেই মাটি, যেখানে অলি আহাদ ১৯৫২ সালে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করেছিল। সেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে ১৪৪ ধারা কাজ করে না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষকে ১৪৪ ধারা দিয়ে আটকে রাখতে পারবেন না।’

সমাবেশে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা সভাপতিত্ব করেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া।