কক্সবাজার প্রতিনিধি : রোহিঙ্গাদের উগ্রপন্থি সশস্ত্র সংগঠন আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহর ভাই রোহিঙ্গা শাহ আলীর কাছে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, চট্টগ্রাম শহরের কোতোয়ালি থানার দেওয়ানবাজারের জয়নব কলোনির ঠিকানা ব্যবহার করে ওই পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি। যার নম্বর এনআইডি নম্বর- ১৯৭১১৫৯৪ ১২০০০০০১৮।
গত রোববার শাহ আলীকে অস্ত্র, মাদকসহ গ্রেফতারের পর উখিয়া থানায় করা মামলার এজাহারে পুলিশ এ তথ্য উল্লেখ করেছে।
মামালার বাদী ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) এসআই মোহাম্মদ রুহুল আজম বলেন, শাহ আলীর কাছে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। তিনি তথ্য গোপন করে, চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার দেওয়ান বাজারের জয়নব কলোনির স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহার করে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছেন।
উখিয়া থানার ওসি সঞ্জুর মোরশেদ বলেন,শাহ আলীকে আদালাতের মাধ্যমে কক্সবাজার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, শাহ আলীর বিরুদ্ধে রবিবার রাতে মোট তিনটি মামলা লিপিবদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদ সালেহ (২৮) নামে এক যুবক বাদী হয়ে অপহরণ ঘটনায় একটি, ১৪ এপিবিএনের এসআই মোহাম্মদ রুহুল আজম বাদী হয়ে অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক অপর দুটি মামলা দায়ের করেন।
ওসি আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ আরও বলেন, শাহ আলী ২০১৯ সালে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ঢাকায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগরীর হাজারীবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা রয়েছে। এ মামলায় তিনি হাইকোর্টের জামিনে আছেন।
আরসা প্রধানের ‘ভাই’ রোহিঙ্গা শাহ আলী কিভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র পেল জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমাকে কেউ অবহিত করেননি। ফাইলপত্র দেখে বিস্তারিত জানতে পারব। আমার স্বাক্ষর কেউ জাল করেছে কি না, তা-ও দেখতে হবে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরটি সঠিক কিনা, যাচাই করে দেখা হবে।
তিনি আরও বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা যদি জানতে চান কিংবা কেউ যদি লিখিত অভিযোগ করেন, সে ক্ষেত্রে বিষয়টি আমরা যাচাই করে দেখব। আদৌ জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরটি সঠিক কি না, যাচাই করা হবে। যদি সঠিক হয়ে থাকে, এটি কীভাবে হলো, তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ায় লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহকে তার কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এরপর ২৩ অক্টোবর ভোরে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের ১৮ নম্বর ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি মাদ্রাসায় গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় ছয়জনকে। চাঞ্চল্যকর এ দুটি হত্যাকাণ্ডের জন্য আরসাকে দায়ী করে আসছেন নিহতের স্বজন ও সাধারণ রোহিঙ্গারা। এ ছাড়া ক্যাম্পে নিরাপত্তার জন্য আরসাকে হুমকি মনে করা হয়।