চট্টগ্রাম : ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড বা টিবিএস যে আস্থার জায়গায় পৌঁছেছে তা সত্যিই অভাবনীয় বলে মন্তব্য করেছেন বন্দরনগরীর ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন খাতের বিশিষ্টজনেরা।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে নগরীর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিসের আয়োজনে উদযাপিত দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন।
করোনা মহামারির কারণে স্বল্প পরিসরে নগরীর কাজির দেউরির কর্ণফুলী টাওয়ারে পত্রিকার ব্যুরো অফিসে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। এরপর কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদযাপন করা হয়। পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরোর প্রধান সামচ্ছুদ্দিন ইলিয়াসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথিরা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার বলেন, আমি পত্রিকাটির নিয়মিত পাঠক। এটি অন্য পত্রিকার মতো শুধু সংবাদ জানায় না। এখানে সংবাদ থাকে, বিশ্লেষণ থাকে। নিয়মিত স্কলাররা লিখেন। আমি পড়ি এবং জানি। পত্রিকাটির এ ধারা অব্যাহত থাকুক।
ট্যুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রামের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মুসলিম বলেন, টিবিএস চট্টগ্রামের সমস্যা, সম্ভাবনা, বিজনেস কমিউনিটি নিয়ে কাজ করছে। পত্রিকাটির নতুন নতুন আইডিয়া, উপস্থাপনা ও কাজ আকর্ষণীয়। কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হচ্ছে। বালির মতো সমুদ্রে রানওয়ে। আমি টিবিএসকে অনুরোধ জানাবো, অভ্যন্তরীন ট্যুরিজমকে যেন গুরুত্ব দেওয়া হয়। ট্যুরিজম শিল্পকে এগিয়ে নিতে টিবিএসসহ সংবাদমাধ্যমকে ভূমিকা রাখতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন বলেন, সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ। এই দর্পণ বা আয়নার কোয়ালিটির ওপর নির্ভর করে কত ভালো প্রতিচ্ছবি দেখা যাবে। টিবিএস সঠিকভাবে সেই কোয়ালিটি পূরণ করছে। এর নামকরণের স্বার্থকতা হিসেবে স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখছে।
বারকোড রেস্তোরাঁ গ্রুপ এবং এন মোহাম্মদ গ্রুপের পরিচালক মনজুরুল হক বলেন, আজকের পৃথিবী সুন্দরভাবে চলার পেছনে সাংবাদিকদের ভূমিকা রয়েছে। গত দুই বছরে টিবিএস ইতিবাচক ধারায় কাজ করেছে। ব্যবসায়ীদের জন্য কাজ করছে। এ ধারা অব্যাহত থাকুক।
ইউরো এলপিজির পরিচালক ইয়ামিন আনাম চৌধুরী বলেন, টিবিএস ব্যবসায়ীদের সবসময় প্রমোট করে। আমরা সাধারণত দেখি, কোন ঘটনা ঘটে মিডিয়াগুলো ব্যবসায়ীদের নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করে। কিন্তু এদিক থেকে টিবিএস ঘটনাগুলো গভীরে গিয়ে পেছনের কারণ বের করে আনে। বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।
এসএ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাজ্জাদ আরেফিন আলম বলেন, ব্যবসায়ীরা টিবিএসকে গ্রহণ করেছেন। পত্রিকাটির প্রতি আস্থা রেখেছেন। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চট্টগ্রাম উন্নয়নে, ব্যবসায়িদের উন্নয়নে টিবিএস কাজ করছে। ব্যবসায়িদের কঠিন পথচলায় টিবিএস পাশে থাকে।
এমঅ্যান্ডএম বিজনেস কমিউনিকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মানজুমা মোরশেদ বলেন, সবাই ঢাকাকে প্রধান্য দেয়। আমরা যারা চট্টগ্রামে কাজ করি, তাদের জন্য কাজ করছে টিবিএস। চট্টগ্রামকে প্রমোট করছে পত্রিকাটি।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম বলেন, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সব খবর গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরছে। আমি নিয়মিত পত্রিকাটি পড়ি। তাই নিজ থেকেই প্রেসক্লাবের সভাপতির সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে এসেছি।
র্যাংকস এফসি প্রোপার্টিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তানভীর শাহরিয়ার রিমন বলেন, মাত্র দুই বছরে টিবিএস যে আস্থার জায়গায় পৌঁছেছে তা সত্যিই অভাবনীয়। বিশেষ করে বিজনেস কমিউনিটিকে ফোকাস করে একটি পত্রিকার কন্টেন্ট ডেলিভারিতে তারা যে মুন্সিয়ানা দেখাচ্ছে, তা প্রশংসনীয়। আমি টিবিএস পরিবারকে অভিনন্দন জানাই।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস বলেন, টিবিএস শুধু দেশে নয়, বিদেশেও সুনাম অর্জন করছে। চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে। আমার অনুরোধ, টিবিএস যেন চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গণ নিয়ে কাজ করে। ক্রীড়াঙ্গণের পিছিয়ে পড়ার কারণ তুলে ধরুক।
কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রামের উপ কমিশনার অনুরূপা দেব বলেন, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম নিউ ইয়র্কস টাইমসের মতো স্ট্যান্ডার্ড ফলো করছে টিবিএস। গুণগত সাংবাদিকতার টেস্ট পাচ্ছি আমরা পাঠকরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে টিবিএসের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সাচ্ছুদ্দিন ইলিয়াস বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কতটুকু হবে প্রথমে তা নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। এরপর তা নির্ভর করবে রাজনীতিবিদদের উপর। আপনার নতুন পত্রিকাকে ভালোবেসেছেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আমরাও এগিয়ে চলার চেষ্টা করছি। মানুষ যখন পত্রিকা পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন, তখন মার্কেটে টিবিএস আসে। পত্রিকা পড়ার আগ্রহ আবার সৃষ্টি করে। তৃতীয় বর্ষের নতুন এই পথচলায় নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে নতুন উদ্যোমে কাজ শুরুর অঙ্গীকার করছি। এসময় সকলের সহযোগিতা চান তিনি।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ বলেন, টিবিএস গত দুই বছরে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে। বিশেষ করে ব্যবসায়ীরা এই পত্রিকাটিতে নিজেদের হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া দেখে আমি মুগ্ধ।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যমের কঠিন সময়ে টিবিএস বাজারে এসেছে। কিন্তু তারা গত দুই বছরে এই প্রতিকূলতার মধ্যে নিজেদের মান ধরে রেখেছে।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা বলেন, অনুষ্ঠানে তরুণ উদ্যোক্তাদের উপস্থিতি জানান দেয় পত্রিকাটি তাদের কাছে কতটুকু জনপ্রিয়। আশা করছি টিবিএস এই জনপ্রিয়তা ধরে রাখবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোটস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমীন শিকদার, বিএসআরমের ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ ও যোগাযোগ) ওমর শোয়েব, একত্র এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জোনায়েদ আহমদ রাহাত এবং শেখ উজায়ের, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ, সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, দৈনিক কালের কন্ঠের ব্যুরো চিফ মোস্তফা নঈম, আমাদের সময়ের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ, মহানগর নিউজের নির্বাহী সম্পাদক শাহনেওয়াজ রিটন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব, মহানগর বিএনপির প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নকীব উদ্দিন ভূইয়া, ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।