রবিবার, ১ অক্টোবর ২০২৩, ১৬ আশ্বিন ১৪৩০

চট্টগ্রামের এলএ শাখা: ‘জোহুরা-কাণ্ডে’ জড়িত সবাই পাঁচ মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি

প্রকাশিতঃ ১২ এপ্রিল ২০২২ | ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন

রানা আবির : চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখায় জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের দুই কোটি ৮৬ লাখ টাকার চেক পাস করিয়ে নেওয়া হয় জোহুরা নামের এক নারীর নামে। শেষ মূহূর্তে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আপত্তি দেওয়ায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পারেন। ফলে আর টাকা হাতিয়ে নিতে পারেনি দুর্বৃত্তরা।

পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, জোহুরা জাল দলিল সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোহুরা বেগমের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় জালিয়াতির মামলা করা হয়। এরপর গত বছরের ৭ নভেম্বর উখিয়ার বাসিন্দা জোহুরা, তার বাবা উসমাণ গণি ও বাঁশখালীর এসিল্যান্ডের চেইনম্যান নেজামুল করিম গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৯ নভেম্বর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ চক্রের মূলহোতা এলএ শাখার সার্ভেয়ার খাজা উদ্দিন লিটনকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার জোহুরা ও নেজামুল করিম ক্ষতিপূরণের চেক উত্তোলনের চেষ্টায় জড়িত থাকার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন। জবানবন্দিতে ক্ষতিপূরণের চেক উত্তোলনে জড়িতদের নাম বলেছেন তারা।

অথচ এই চক্রের অন্য সদস্যরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নগরীর কোতোয়ালী থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তে আশাব্যঞ্জক কোন অগ্রগতি নেই।

জালিয়াতির চেষ্টা ব্যর্থ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন যমুনা ব্যাংকের জুবলি রোড শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইউসুফ; তিনি একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘জোহুরার একাউন্টটি ছিল একেবারে নতুন। তার হিসাবের বিপরীতে ঠিকানা ভেরিফাই করা ছিল না। সে কারণে আমরা শুরুতে চেকটি জমা করতে সময় নিয়েছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে নিজাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি জোহুরাকে সাথে নিয়ে ব্যাংকে এসে চেকটি জমা নেবার জন্য হুমকি দিতে থাকেন। চেক জমা না করলে টেলিভিশনে নিউজ করে দেবার হুমকি দিতে থাকেন এশিয়ান টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয় দেয়া নিজাম উদ্দিন খান। এই বিষয়ে তাৎক্ষণিক নগরীর কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। বিষয়টি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককেও জানানো হয়। জেলা প্রশাসক চেকটি জমা নেবার বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেন। পরবর্তীতে জানা যায় যে, একটি চক্র ভূমি মালিকের জাল পাওয়ার অব এটর্নি তৈরি করে ক্ষতিপূরণের টাকা হাতিয়ে নেবার পরিকল্পনা করেছিল।’

যমুনা ব্যাংকের জুবলি রোড শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইউসুফ আরও জানান, চেকটি ক্যাশ করতে বিভিন্ন মহল থেকে তার উপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিল। জনৈক সাংসদের আত্মীয় ও টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চেক ক্যাশ করতে উপর্যুপরি চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন নিজাম উদ্দিন খান। এমনকি চেক জমা না করায় যমুনা ব্যাংকের হেড অফিসে অভিযোগ করে চক্রটি।

জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোমিনুল হাসান একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার আসামি জোহুরা, নেজামুল, খাজা কারাগারে রয়েছেন। নিজাম উদ্দিন খানের বিষয়ে যমুনা ব্যাংক জুবলি রোড শাখার ব্যবস্থাপকের করা জিডির বিষয়ে আদালত থেকে তদন্তের অনুমতি পাওয়া গেছে। ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

জানা যায়, অধিগ্রহণকৃত ভূমির মূল মালিক আব্দুল কালাম শামসুদ্দিন ও আবু হেনা মোস্তাফার জাল পাওয়ার অব এটর্নি তৈরি করে সরকারী অর্থ হাতিয়ে নেবার ছক আঁকে সংঘবদ্ধ চক্রটি। ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে তারা কৌশলে ২ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার চেক পাস করিয়ে নেয় চট্টগ্রামের এলএ শাখা থেকে। জেলা প্রশাসনের অধিগ্রহণ শাখার ইস্যুকৃত চেকটি নগরীর জুবলী রোডস্থ যমুনা ব্যাংকে জমা দিতে যান জোহুরা ও জনৈক নিজাম উদ্দিন খান। ব্যাংক ম্যানেজারের সন্দেহের কারণে চেকটি জমা করতে ব্যর্থ হয় চক্রটি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২১ সালের ১০ জুন চট্টগ্রাম সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে ওই জাল আমমোক্তারনামা রেজিস্ট্রি করা হয়। আমমোক্তারনামার শনাক্তকারী ও স্বাক্ষী হিসেবে জনৈক শহিদুল আলমের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। তার ঠিকানা দেয়া হয়েছে পূর্ব ষোলশহরের ৪ নং ওয়ার্ড শমসেরপাড়া। আমমোক্তারনামায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী শহিদুল আলমের পিতা মরহুম নুরুল আলম, মাতা রোকেয়া বেগম। স্বাক্ষী হিসেবে দেখানো হয়েছে বহদ্দারহাটের ফরিদার পাড়ার আব্দুল খালেকের ছেলে জনৈক মো. আলীকেও।

আমমোক্তারনামায় রেজিস্ট্রি কর্মকর্তা হিসেবে সদর সাব রেজিস্ট্রার শাহ মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভুঁইয়ার স্বাক্ষর ও সিল দেয়া আছে। ভূমির মালিক হিসেবে আব্দুল কালাম শামসুদ্দিন ও আবু হেনা মোস্তাফার স্বাক্ষর রয়েছে জাল পাওয়ার অব এটর্নিতে। কিন্তু এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষে দায়ের করা মামলায় ব্যাংকে গিয়ে চেক জমা করতে ম্যানেজারকে হুমকি দেয়ার সাথে জড়িত নিজাম উদ্দিনকে আসামি করা হয়নি। মামলার এজাহার থেকে বাদ দেয়া হয়েছে জাল পাওয়ার অব এটর্নি দলিল তৈরিতে শনাক্তকারী, স্বাক্ষী হিসেবে সহায়তা করা ব্যক্তিদেরও৷

প্রতিবেদকের হাতে আসা ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জোহুরাকে সাথে নিয়ে যমুনা ব্যাংক জুবলি রোড শাখায় প্রবেশ করছেন সাংবাদিক পরিচয় দেয়া নিজাম উদ্দিন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের রুমে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে বাকবিতন্ডায় জড়াতেও দেখা গেছে তাকে। কিন্তু নিজাম উদ্দিনের নাম মামলার এজাহার থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী অভিযুক্ত জোহুরাকে সাথে নিয়ে এলএ শাখায় চেক আনতে বেশ কয়েকবার যাওয়া আসা করেছিলেন নিজাম উদ্দিন খান।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অধিগ্রহণ শাখার একটি সূত্র জানায়, মামলার এজাহারে এই ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত নিজাম উদ্দিন খানের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে পুলিশের অনুরোধে এজাহার সংশোধন করে নিজামের নাম আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়।

প্রতিবেদকের হাতে আসা মামলার টাইপ করা প্রথম এজাহারটি পর্যালোচনা করে নিজাম উদ্দিনের নাম দেখা গেছে৷ কিন্তু পরবর্তীতে তার নাম বাদ দিয়ে সংশোধিত এজাহারের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয় কোতোয়ালী থানায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার সদ্য সাবেক ওসি (বর্তমানে পিবিআই-এ কর্মরত) নেজাম উদ্দিন একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে এজাহার দেয়া হয়েছে সেটির ভিত্তিতেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। কারেও নাম বাদ পড়লে সেটি নিশ্চয়ই তদন্ত সাপেক্ষে যুক্ত করবেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন যমুনা ব্যাংকের ম্যানেজার, সেটিরও তদন্ত চলছে।’

সিসিটিভির ফুটেজে নিজাম উদ্দিনকে জোহুরার সাথে ব্যাংকে প্রবেশ ও বের হবার দৃশ্য ধরা পড়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সাথে জড়িত কাউকেই ছাড় দেবে না পুলিশ। কারও নাম বাদ পড়লে জেলা প্রশাসন চাইলে নতুন করে অভিযোগ দিতে পারেন।’ তবে চেকটি জমা নিতে হুমকি দেবার বিষয়ে ব্যাংক ম্যানেজারের করা সাধারণ ডায়েরির পর নিজাম উদ্দিনকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

অধিগ্রহণকৃত জায়গার প্রকৃত মালিক কারা?

বন্দর থানাধীন ডাঙ্গারচরের ইস্টার্ন রিফাইনারির পাইপ লাইনের কাজের জন্য সরকারের অধিগ্রহণকৃত ভূমির প্রকৃত মালিক চট্টগ্রামের হেমসেন লেইনের বাসিন্দা আব্দুল কালাম শামসুদ্দিন ও আবু হেনা মোস্তাফা। তারা দুজনই চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক প্রয়াত ডাক্তার আব্দুর সাত্তারের সন্তান। বয়োবৃদ্ধ এই জমি মালিকরা তাদের ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি জানতেনই না। কারণ জমির বেশ কিছু অংশ তারা অন্য এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জোহুরা নামের এক নারীকে ব্যবহার করে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাতের ছক আঁকেন সার্ভেয়ার নেজামুল করিম, নিজাম উদ্দিন খান ও তাদের সহযোগীরা।

কে এই জোহরা?

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী জোহুরার বাড়ি কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায়। মরিচ্যা ইউনিয়নের পাগলির বিলের ওসমান ও আয়েশা আক্তারের মেয়ে জোহরা (২৫)। তার এনআইডি নম্বর ২৪১৩২৫৪৭৬০। আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দি অনুযায়ী জোহুরা বিবাহিত। তবে তার স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ হয়েছে। জবানবন্দিতে জোহরা উল্লেখ করেন, বাঁশখালীর ভূমি অফিসের চেইনম্যান নেজামুল করিমের পরিকল্পনায় এমন জালিয়াতির সাথে জড়িয়েছেন তিনি। ঘটনা পরিক্রমায় নিজাম ও রুবেল নামের অন্য দুইজনের সাথে তার পরিচয় হয়েছে। জবানবন্দিতে তিনি জানান, পাঁচ লক্ষ টাকার চুক্তিতে জালিয়াতির সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিলেন।

ভুমি অধিগ্রহণ শাখার একটি সূত্রমতে, জোহুরার সাথে চেইনম্যান নেজামুল করিমের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। নিজাম উদ্দিন খানের সাথেও তার পরিচয় অবৈধ সম্পর্কের সূত্রে। নগরীর বাকলিয়ার একটি বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল নিজাম উদ্দিন খান ও নেজামুল করিমের। সেখান থেকেই সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেবার পরিকল্পনা করেন তারা।

জাল পাওয়ারের বিপরীতে কীভাবে চেক ইস্যু হলো?

ভূমি অধিগ্রহণের টাকা তোলার জন্য বেশকিছু ধাপ পার হতে হয় ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের। ক্ষেত্র বিশেষে ক্ষতিপূরণের চেক পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষাও করতে হয়। কিন্তু ডাঙারচরের এই ভূমিটির বিপরীতে জাল পাওয়ার অব এটর্নি জমা দিয়ে কীভাবে চেক ছাড় করিয়েছে চক্রটি- সেই প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের। অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ পেতে আবেদনের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র, ভূমির দলিল, পর্চা, খতিয়ান, খাজনা দাখিলাসহ বিভিন্ন কাগজপত্র জমা দিতে হয়৷ সবধাপ শেষে এডিসি (এলএ) এর চূড়ান্ত নিরীক্ষা শেষে ক্ষতিপূরণের চেক ইস্যু করা হয়।

জানা যায়, জেলা প্রশাসনের হিসাব বিভাগে কর্মরত ছাবের ও ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার আলীর সহযোগিতায় জাল পাওয়ার অব এটর্নির বিপরীতে ক্ষতিপূরণের চেক ইস্যু করিয়ে নেয় চক্রটি। কিন্তু চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুল হকের অনড় অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত চেকটি ক্যাশ করতে পারেনি তারা। তবে মামলার ৫ মাস পার হলেও তদন্তের গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে জানতে এডিসি (এলএ) মাসুদ কামাল একুশে পত্রিকা বলেন, ‘জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা সুকৌশলে ভূমি অধিগ্রহণের বিপরীতে চেক সংগ্রহের সব ধাপ সম্পন্ন করেছিল। জোহুরার এনআইডি নিরীক্ষা করে কোন ত্রুটি ধরা পড়েনি। শুরুতে আমরা তাকে রোহিঙ্গা বলে ধারণা করেছিলাম। কিন্তু দেখা গেলো তার জাতীয় পরিচয়পত্র, টিআইএন- সবকিছু ঠিকই আছে। ব্যাংক ম্যানেজারের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অধিকতর তদন্ত করে জাল পাওয়ার অব এটর্নি তৈরি করে এই চেক জালিয়াতি ধরে ফেলতে সক্ষম হই।’

তিনি বলেন, ‘নিজেদের মালিকানাধীন জায়গা সম্পর্কে প্রকৃত ভূমি মালিক সচেতন নন বলেই এমন জালিয়াতির সুযোগ পেয়েছে চক্রটি। পাওয়ার অব এটর্নি তৈরিতে চক্রটি ভূমি মালিকের সব তথ্যই ঠিকঠাক উল্লেখ করেছিলেন। শুধু তাদের ঠিকানা উলট-পালট করেছেন। পুরো প্রক্রিয়ায় অনেকেই জড়িত ছিলো-এটা নি:সন্দেহে বলা যায়।’