রাঙ্গুনিয়া কলেজের বিএ পাস ছাত্র চবি’র ভিসি

:: একুশে প্রতিবেদক ::

cu vc 2চট্টগ্রাম: ‘ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাঙ্গুনিয়া ডিগ্রি কলেজ। এই কলেজ থেকেই ১৯৭৫ সালে বিএ (পাশ) করেছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। অথচ এই কলেজের নামটিই তিনি আর উচ্চারণ করতে চান না। কোথাও বলেন না তিনি রাঙ্গুনিয়া ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। এটি যেন তার কাছে রীতিমতো অস্বস্তিকর বিষয়!- এই কষ্টোক্তি খোদ রাঙ্গুনিয়া কলেজের কয়েকজন শিক্ষকের।

রাঙ্গুনিয়া কলেজের পুরোনো নথিতে দেখা যায়, ১৯৭৫ সালে এ্ই কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস (বিএ) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মাত্র চারজন ছাত্র উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এর মধ্যে দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেন ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। সর্বমোট নম্বর পেয়েছিলেন ৪৯৭। বাকি তিনজন উত্তীর্ণ হন তৃতীয় বিভাগে। তুলনামূলক ভালো ফল করলেও বিষয়টি বরাবরই এড়িয়ে চলছেন ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাঙ্গুনিয়া কলেজের এক অধ্যাপক একুশে পত্রিকাকে বলেন, ভিসি স্যার আমাদের কলেজ থেকে বিএ পাশ করেছেন, এটা আমাদের জন্য গৌরবের। আমাদের কলেজে পড়াশোনা করে তিনি আজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এই গৌরবগাথা আমরা ইচ্ছা করলেও ফেরি করতে পারি না। কারণ, স্যার সেটি প্রকাশ করতে চান না। কেন চান না সেটি অবশ্য তিনিই জানেন।

কলেজের আরেক শিক্ষক বললেন, তিনবছর আগে উপ উপাচার্য থাকাকালে ইফতেখার স্যার রাঙ্গুনিয়া কলেজের একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন। তখনো আমরা জানতাম না, স্যার রাঙ্গুনিয়া কলেজেরই ছাত্র। স্যার বক্তৃতা করলেন, নীতি-নৈতিকতার কথা শোনালেন। অথচ একবারও বললেন না তিনি এই কলেজ থেকেই বিএ পাশ করেছেন।

এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী ১৯৭০ সালে এসএসসি, ১৯৭২ সালে এইচএসসি, ১৯৭৬ সালে বিএ (পাশ) ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে মাস্টার্স এবং ১৯৮৮ সালে পিএইচডি করেছেন জাপানের টিসুকুবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এছাড়া ১৯৭৮ সালে এলএলবি পাশের কথা লেখা আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে।

মাস্টার্স এবং পিএইচডি’র বেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উল্লেখ থাকলেও এসএসসি, এইচএসসি, বিএ এবং এল্এলবি কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সম্পন্ন করেছেন তার উল্লেখ নেই। এছাড়া রাঙ্গুনিয়া কলেজের নথিতে ১৯৭৫ সালে তিনি বিএ পাশ করেছেন মর্মে তথ্য থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে উল্লেখ আছে ১৯৭৬ এর কথা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একাধিকবার ফোন করেও এই বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রতিবারই তার মোবাইল ফোনে রিং হয়, কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি।

এপডটকম/এটি