একুশে প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া অন্যান্য পদপ্রত্যাশীরা জীবন বৃত্তান্ত জমা দিতে আজ শনিবার ঢাকায় সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ে ভিড় জমিয়েছেন।
আজ শনিবার (১৪ মে) বেলা ১২টা থেকে ১৬ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নেতাকর্মীদের জীবন বৃত্তান্ত জমা নেবে কেন্দ্রীয় যুবলীগ।
এই সুযোগে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিক সামনেই জমজমাট ব্যবসা শুরু করেছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সোলাইমান ভূঁইয়া রঞ্জু; অভিযোগ উঠেছে, ৩২ পৃষ্ঠার ‘যুবলীগের গঠনতন্ত্র’ বইটি তিনি বিক্রি করছেন ২০০ টাকায়।
অথচ বইয়ের মলাটের উপরই শুভেচ্ছা মূল্য দেওয়া আছে মাত্র ৫০ টাকা। এছাড়াও ২২০ টাকা মূল্যের বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ৩০০ টাকা এবং যুবলীগের প্রকাশনায় প্রকাশিত ৪৫০ টাকা মূল্যের ‘বিপ্লব ও মানবিকতা’ বইটি ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন রঞ্জু।
বিভিন্ন পদের জন্য জীবন বৃত্তান্ত জমা দিতে এসে যুবলীগ সম্পর্কে জানতে বেশি দামেই বই কিনে নিয়েছেন অনেকে। আবার অনেকে সেই বই নিয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগের সাথে ফটোসেশানও করেছেন।
এদিকে, বই কিনতে আগ্রহী বেশ কয়েকজন ক্রেতার সাথে বাকবিতণ্ডায়ও জড়িয়ে পড়েন রঞ্জু। যুবলীগের গঠনতন্ত্র বইয়ের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণেই তাদের এই ক্ষোভ। ক্রেতাদের অভিযোগ, ৫০ টাকার বইয়ের মূল্য ১৫০ টাকা বেশি রেখে বিক্রি করছেন সোলাইমান ভূঁইয়া রঞ্জু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্রেতা একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় যুবলীগের সাংগঠনিক পদপ্রত্যাশী। যুবলীগের গঠনতন্ত্র ভালোভাবে জানার তাগিদেই ভাবলাম বইটি কিনি। কিন্তু বইটি কিনতে গিয়ে রীতিমতো অবাক হলাম। বইটি শুভেচ্ছা মূল্যের চেয়ে ৪ গুণ বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। যুবলীগের কার্যালয়ে তাদের এমন অনিয়ম ও স্পর্ধা দেখে আমি হতবাক।’
সিভি জমা দিতে আসা আরেকজন পদপ্রত্যাশী অভিযোগ করে বলেন, ‘বইটির মাত্রাতিরিক্ত মূল্যের বিষয়ে আমি সোলাইমান ভূঁইয়া রঞ্জুকে প্রশ্ন করেছি। তিনি উল্টো উঁচু গলায় আমাকে বললেন, কেন্দ্রের নির্দেশে এই মূল্য নেওয়া হচ্ছে, প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ নেই। পরবর্তীতে আমি ২০০ টাকা দিয়ে ওই জায়গা থেকে চুপিসারেই চলে আসি।’
জানতে চাইলে প্রথমে বই বিক্রির কথা স্বীকার করেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সোলাইমান ভূঁইয়া রঞ্জু। পরবর্তীতে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার অভিযোগের বিষয়টি বলা মাত্রই বইগুলো তিনি বিক্রি করছেন না বলে দাবি করেন। শুরুতে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর, পরবর্তীতে অফিস সহকারীর উপর দোষ চাপান তিনি।
একুশে পত্রিকার কাছে তার (সোলাইমান ভুইঁয়া রঞ্জু) ছবি সংরক্ষিত আছে জানালে তিনি বলেন, ‘যুবলীগের গঠনতন্ত্র বইটি আমি বিক্রি করিনি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি শুধু বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং বিপ্লব ও মানবিকতা এই বইগুলো বিক্রি করছি।’
জানতে চাইলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর মাহমুদুল হাসান একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘বইগুলো যুবলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা শাখা থেকে বিক্রি করা হচ্ছে। অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।’
এ প্রসঙ্গে জানতে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ এবং দপ্তর সম্পাদক মােস্তাফিজুর রহমান মাসুদকে একাধিকবার ফোন করলেও তারা সাড়া দেননি।