চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মামলা প্রত্যাহার করে নিতে বাদীকে হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছিল মো. নাছিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে; ওই মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) চট্টগ্রামের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুন এই আদেশ দিয়েছেন বলে জানান বাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান খান।
কারাগারে যাওয়া নাছিম উদ্দিন (৪৫) হাটহাজারীর চিকনদন্ডী ইউনিয়নের ফতেয়াবাদ এলাকার ফজর রহমান মিস্তি বাড়ির মৃত বজল আহম্মদের ছেলে।
এর আগে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর পিএস পরিচয়ে প্রভাব বিস্তার, স্বজনদের উপর হামলা, মারধর ও গুরুতর রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ উঠে নাছিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত ৫ অক্টোবর নাছিমসহ ৫ জনকে আসামি করে হাটহাজারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী শাহ আলম।
অন্য আসামিরা হলেন, মো. নাছিম উদ্দিনের ভাই মো. নাজিম উদ্দীন, তার স্ত্রী সীমা আক্তার (৩০), মো. নাছিম উদ্দিনের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৩৭) ও তার ছেলে মো. নাফিজ (১৯)।
অভিযোগ, মো. নাছিম মেয়রের পিএস পরিচয় দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে তার চাচাতো ভাই শাহ আলমদের উপর প্রভাব বিস্তার করে তাদের সম্পত্তি জবর দখলের চেষ্টা ও নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। সর্বশেষ গত ৪ অক্টোবর সকাল নয়টায় আসামিরা ও অজ্ঞাত ২-৩ জন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শাহ আলমের বাড়িতে ঢুকে তার উপর হামলা করে।
এ ঘটনায় হাটহাজারী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, মো. নাছিম উদ্দিন ও তার সঙ্গীরা তার চাচাতো ভাই শাহ আলমকে কিরিচ দিয়ে আঘাত করলে ডান হাতে লেগে রক্তাক্ত জখম হয়। এসময় তাকে বাঁচাতে আসলে তার আরেক চাচাতো ভাই, ভই, স্ত্রী, ভাতিজী, ভাতিজাকে মারধর করে গুরুতর আহত করে।
হামলার সময় শাহ আলমের বাড়ির টিন, বেড়া, কাঠ, বাঁশ ভাঙচুর করে আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে এবং পকেটে থাকা ৮ হাজার টাকা লুট করে নেয়। পরবর্তীতে আহতরা চমেক হাসপাতাল ও স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মো. নাছিম উদ্দিন তার স্বজনদের নানাভাবে ভয়ভীতি, হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। তার সাথে সিটি মেয়রসহ গণমান্য ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্ক রয়েছে।
মামলার বাদী শাহ আলমের অভিযোগ, ঘটনার দিন তিনি তার ঘর নির্মাণের কাজ করছিলেন। কিন্তু নাছিম উদ্দিন তাতে বাধা দেন৷ একপর্যায়ে দলবল নিয়ে তাদের উপর হামলা করেন৷ তারা সবাই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে নাছিম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছের লোক, পিএস, ঘনিষ্ঠ এসব বলে হুমকি দিয়ে আসছে। অত্যচার-নির্যাতন করে আসছে। তার নির্যাতনে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছি। তিনি আমাদের জন্য কথায় কথায় পুলিশ নিয়ে আসতেন। মামলা করার পরও তাদের অত্যাচার থেকে আমরা রেহাই পাইনি। মামলা তুলে নিতে নাছিম আমাদেরকে হুমকি দিয়ে আসছিল।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান খান বলেন, মামলার প্রধান আসামি নাছিম আজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।