একুশে ডেস্ক : বৈরী আবহাওয়ার পর গত তিন দিন থেকে উত্তরাঞ্চলের জনপদগুলোতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় হিমেল বাতাস। এরপর রাতভর বৃষ্টির মতো ঝিরঝির করে কুয়াশা ঝরতে থাকে। ফলে নেমে যাচ্ছে তাপমাত্রা। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াতে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, চলতি মৌসুমে এটিই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এমনকি আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও তেঁতুলিয়ায়। গতকাল সোমবার রেকর্ড হয়েছিল ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদেিক সকাল ৯টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা ছিল জনপদ। এতে করে দিনের বেলায়ও যানবাহনের লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কমলেও বিকাল গড়াতেই আবারও শীত অনুভূত হতে থাকে। শহরের তুলনায় গ্রামে শীতের তীব্রতা একটু বেশি। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে নিম্ন-আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ ও কৃষকদের।
হঠাৎ করে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় মানুষ এ আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে কষ্ট হচ্ছে। শীত নিবারণে মানুষ গরম কাপড় পরিধানের পাশাপাশি চা পান করতে ভিড় করছে চায়ের দোকানে।
নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া কৃষি পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দেশের মধ্যে এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৪ ডিগি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগি সেলসিয়াস।
চট্টগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত
আজ মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) ভোরে কুয়াশায় ঢাকা ছিল চট্টগ্রাম নগর ও উপজেলাগুলো। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কমে আসলেও শীতের তীব্রতা লক্ষ্য করা গেছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ ও পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. আলী আকবর খান জানান, সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা হতে মঙ্গলবার (আজ) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এছাড়া ভোরের দিকে হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা বিরাজ করতে পারে।
রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
শীতের তীব্রতা বাড়ায় শীতবস্ত্রের অভাবে বিপাকে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষ। এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় বাড়ছে শীতজনিত রোগ। বিশেষ করে শিশুরা নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, ডায়েরিয়াসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বলেন, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া নিয়ে কিছু রোগী ভর্তি আছে। এখন তো শীতের শুরু। কয়েকদিন পরে বোঝা যাবে শীতজনিত রোগের প্রকোপ কেমন হচ্ছে।