শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে কেউ চায় না ভোট খারাপ হোক : ইসি আনিছুর

প্রকাশিতঃ ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ৭:৩৯ অপরাহ্ন


চট্টগ্রাম : সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে কেউ ভোট খারাপ হোক, তা চান না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান। বুধবার (২৪ এপ্রিল) চট্টগ্রামে নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোডে প্রাইমারি টিচার্স ইনস্টিটিউটে এক মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান বলেন, একটা বড় দল যারা এখন শাসক দল হিসেবে পরিচিত, তাদের দলীয় প্রধান, তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ওই দলের সাধারণ সম্পাদক তিনিও বলেছেন, এমপি-মন্ত্রীদের অবস্থান বিষয়ে বা তাদের আত্মীয়স্বজনের প্রার্থিতা বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। যদিও এটা আইনের মধ্যে পড়ে না। আইনের পরিপন্থি। এটা তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমরা কিন্তু এটা বলিনি। কারণ এটা বলতে পারি না।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে এই সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন আনিছুর রহমান।

মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালীন সময় অনিয়ম হলে সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠাবোধ করব না। আমাদের একটাই চাওয়া-নির্বাচনকে সুন্দর করতে হবে। কোনও অনিয়ম, কারচুপি বা যেখানেই অন্যায় কার্যক্রম হবে সেখানে প্রিজাইডিং অফিসার ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

আনিছুর রহমান মতবিনিময় সভায় বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয় এবং যা আপনারা করেছিলেন ৭ জানুয়ারিতে, সেসব একই জিনিস থাকবে। আপনারা কেউ কেউ বলবেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জাতীয় নির্বাচনে অত প্রভাব ছিল না। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীও যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল। সে কারণে ন্যাচারালি একটা চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স ছিল। এখন তো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আছেন। মন্ত্রী মহোদয়রা আছেন। তাদের কিছু প্রভাব থাকতে পারে। বা ভিন্নতা আসতে পারে।

দেশে এখন ৪৯৫টি উপজেলা রয়েছে। নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় এবার চার ধাপে ৮ মে, ২১ মে, ২৯ মে ও ৫ জুন ভোট হবে। পরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বাকিগুলোয় ভোটের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন।

ভোটার উপস্থিতি বাড়ার আশা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, এই নির্বাচনে মাত্র ৯টা জেলায় ইভিএমে করার ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রথমেই কমিশন সিদ্ধান্তে আসছে, যে জেলায়ই ইভিএম হবে সেখানে পুরো জেলার জন্য করব। একটা উপজেলায় ইভিএম করব একটাতে ব্যালটে করব এটা সঠিক হবে না। পাশাপাশি আরো সিদ্ধান্ত ছিল অপেক্ষাকৃত ছোট জেলাগুলোতে করা যাতে আমরা পুরোটা কভার করতে পারি।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে কিন্তু ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে একজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। কারণ বাতিল করার মত উপাদান ছিল। এবং তাকে আমরা সপ্তাহখানেক আগে থেকে তার অ্যাকটিভিটিজগুলো ট্র্যাক করছিলাম। তাকে যখন কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। সবশেষ থানায় ঢুকে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে যখন মারধর করছেন, সার্কেল এসপি নিবৃত্ত করতে পারছেন না। এরপর আর বসে থাকা যায় না, তাহলে তো আমাদের আর অস্তিত্ব থাকে না। আমরা তো আর বসে থাকতে পারি না। তখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আনিছুর রহমান বলেন, গাইবান্ধায় ব্যাপক অনিয়ম হওয়ায় আমরা নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছিলাম। আইন থাকলে হবে না। আইনের প্রয়োগ লাগবে। যে যেখানে ভোটের দিন থাকবেন আইনের সপক্ষে তা প্রয়োগ করবেন। এতে যদি কোনো বিপদগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা থাকে, আমরা আপনাদের পাশে আছি। সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে কেউ চায় না ভোটটা খারাপ হোক। বারবার তিনি বলছেন, ভোট যেন ভালো হয়। ভোট সুন্দর সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য যে যে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন আপনারা নেবেন।

বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, বিজিবি’র রিজিওনাল কমান্ডার মো. আজিজুর রহমান, ডিজিএফআই চট্টগ্রাম শাখার অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সরওয়ার, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, পুলিশ সুপার এস. এম. শফিউল্লাহ, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী ও জেলার অন্যান্য কর্মকর্তারা।