আগ্রাবাদে একের পর এক সংঘাত, জনমনে আতঙ্ক


চট্টগ্রাম : নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় দুই পক্ষের মাঝে একের পর এক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে লাকি প্লাজার বিপরীতে সাউথল্যান্ড সেন্টারের সামনে নতুন করে সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এতে রানা নামের এক যুবককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

অভিযোগ আছে, আগ্রাবাদ এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠা এই দুই গ্রুপের একটির নেতৃত্বে রয়েছেন কথিত যুবলীগ নেতা পারভেজ, অপর গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন শাকিল। দুই গ্রুপের অনুসারীরা আগ্রাবাদ এলাকায় নানা অপকর্ম করে বেড়ালেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে লাকি প্লাজার বিপরীতে এক যুবক দৌঁড়ে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। রিকশার চাকায় পা লেগে মাটিতে পড়ে যান ওই যুবক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ১৫-২০ জন যুবক এসে এলোপাথাড়ি মারতে থাকেন ওই যুবককে। এদের মধ্যে একজন পেছন থেকে চাপাতি বের করে পাঁচটি ঘা দেন ওই যুবককে। অন্যরা লাঠি দিয়ে মেরে ক্ষান্ত হন। এ সময় আগ্রাবাদ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশে যারাই মোবাইলে ঘটনাটির ভিডিও ধারণের চেষ্টা করেন তাদেরও পিটিয়েছেন হামলাকারীরা।

জানা গেছে, এই মারামারির কিছুক্ষণ আগে ঘটে আরও একটি মারামারি। আবার সেই মারামারির কারণ ১২ দিন আগের গণপূর্ত বিভাগের আরেকটি মারামারির ঘটনা।

জেলখেটে গত পরশু বের হয়েছেন বৃহস্পতিবার হামলার শিকার রানা। জেলে কেন যেতে হলো—সেই শোধ নিতে সাউথল্যান্ড মার্কেটের পেছনে মৌলভী পাড়ার একটি খেলার মাঠে খেলতে থাকা শাকিলের এক অনুসারীর ওপর হামলা চালান দাঁতলা সুমন, রানা, বাইট্টা মাসুম ও রনিসহ অন্তত ১০ জনের একটি দল।

সেখানে শাকিল গ্রুপের রনিকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ঘটনা দেখে ফেলার পর রানাদের ধাওয়া দেয় শাকিলের অনুসারীরা। একসময় ধাওয়া খেয়ে রানা বাকিদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তাকে সাউথল্যান্ড মার্কেটের সামনে একা পায় শাকিলের ১৫-২০ জন অনুসারী। আর নিজেদের কর্মীকে ছুরি মারার অপরাধে রানাকেও কুপিয়ে জখম করে তারা।

এর আগে ৩০ জুন আগ্রাবাদের গণপূর্ত কার্যালয়ের ঠিকাদারদের অফিসে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে এক সরকারি কর্মকর্তাসহ মোট তিনজন গুরুতর আহন হন। এই ঘটনার পর পুলিশ তাৎক্ষণিক একজন ও পরে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন হচ্ছেন রনি। তিনি কথিত যুবলীগ নেতা পারভেজের অনুসারী।

একের পর এক রক্তারক্তির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ওই এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে। আগ্রাবাদের একজন বাসিন্দা বলেন, প্রতিদিন ঘর থেকে বের হতে হয় ভয়ে ভয়ে। কখন যে সংঘাতের মাঝখানে পড়ে সেই সেই আতঙ্কে থাকতে হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পারভেজ একুশে পত্রিকাকে বলেন, আমি ঠিকাদারি ও রাজনীতি থেকে দূরে আছি। এ (বৃহস্পতিবারের) ঘটনা সম্পর্কে আমি জানিও না।

একই ব্যাপারে শাকিলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ওসি ফজলুল কাদের পাটোয়ারী একুশে পত্রিকাকে বলেন, বৃহস্পতিবারের ঘটনায় যাকে মারা হয়েছে তিনি থানায় এসেছেন। আমরা মামলা নিচ্ছি। মামলার পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।