একুশে প্রতিবেদক : সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সৃষ্ট সহিংসতা ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় বন্দরসমূহে আমদানি-রপ্তানি এবং শুল্কায়ন কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তবে পরিস্থিতির উন্নতি এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পুনরায় চালু হওয়ায় চট্টগ্রাম, মোংলা, বেনাপোলসহ অন্যান্য বন্দর এবং কাস্টমসের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে আসছে। কাস্টমস হাউসে সার্ভারের মাধ্যমে শুল্কায়নসহ আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট কাজ পুরোদমে চলছে এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহনের জন্য শত শত ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও ট্রেইলার প্রবেশ করছে এবং মালবোঝাই করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে। বেনাপোল স্থলবন্দরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান জানিয়েছেন, স্বাভাবিক সময়ের মতোই কাজ চলছে, বরং আগের চেয়ে আরও বেশি কাজ হচ্ছে। পণ্য ডেলিভারি, জাহাজীকরণসহ সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।
ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় জমে থাকা কাজের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গত শুক্রবার ও শনিবার কাস্টমস কর্মকর্তারা অফিস করেছেন। বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিমও জানিয়েছেন, বেনাপোল বন্দরের আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে আসছে এবং ইন্টারনেট বন্ধের কারণে সৃষ্ট পণ্যজট খুলতে শুরু করেছে।
গত ২৩ জুলাই চট্টগ্রামে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ার পর অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের সঙ্গে কাস্টমস সংযুক্ত হয় এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
ইন্টারনেট না থাকায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শুল্কায়ন, বন্দরের আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ডকুমেন্টেশন, পণ্যের ঘোষণা অনুযায়ী ইনস্পেকশন, কনটেইনার রাখার স্থান নির্ধারণ, ডিউটি আদায়সহ সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। নিজস্ব নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রম সীমিতভাবে সচল রাখা হলেও শুল্কায়ন নথি না পৌঁছায় পণ্য ডেলিভারি ও জাহাজিকরণ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া সংঘাত ও কারফিউর কারণে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর অনেকটাই কাস্টমসের ওপর নির্ভরশীল। কাস্টমস থেকে শুল্কায়নের পর ছাড়পত্র পেলেই কেবল বন্দর থেকে পণ্য বের করার অনুমতি দেওয়া হয়। একইভাবে রপ্তানি পণ্যও শুল্কায়নের পর জাহাজে তোলা হয়।
বন্দর সূত্র জানায়, ১৮ জুলাই রাতে ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার পর বন্দরসমূহের কাস্টমসে শুল্কায়ন কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পচনশীল পণ্য খালাসের জন্য বেনাপোল বন্দরে ম্যানুয়ালি সীমিত পণ্যের শুল্কায়ন হয়। তবে এখন চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ডেলিভারি ক্রমশ বাড়ছে এবং বেনাপোল বন্দরেও শত শত ট্রাক ভারত থেকে প্রবেশ করছে।