শেখ মোহাম্মদ জুলফিকার বিপুল : ২০২৩ সালের ২ আগস্ট, প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যেই ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সে করে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে পৌঁছালেন তিনি। এই বিশেষ দিনটির জন্যই কি প্রকৃতি এতটা অপেক্ষা করেছিল!
আপনার সাথে বন্ধুত্বটা ছিল আল্লাহপাক থেকে দেওয়া অমূল্য এক উপহার। কত অল্প সময়ের জন্য অথচ কত তীব্র। একসাথে বেড়ে উঠলেও, অনেক বছরের চেনা হলেও এরকম বন্ধুত্ব হয় না।
গ্রামের সাথে সম্পর্ক না থাকা নিয়ে নিজেকে ‘শোরগো’ [শহুরে] বলে আক্ষেপ করতাম, মন খারাপ করতাম বলে- আপনি আপনার গ্রামকে আমার করে দিয়েছেন। সুখবিলাস, পদুয়া, শিলক নদী, গুমাই বিল আর রাঙ্গুনিয়া… যেন আমার নিজের গ্রাম হয়ে উঠেছিল।
রাঙ্গুনিয়ায় হাজারো স্মৃতি আমাদের- মাছ ধরা, বন্য হাতির তাড়া খাওয়া, গল্প, গান, আড্ডা…
অসীম সাহসী মানুষ আপনি। সম্পাদক হিসেবে একুশে পত্রিকা চালাতে গিয়ে দেখতাম বিভিন্ন ফোন, প্রলোভন, হুমকিতে আপনি কেয়ারলেস থাকতেন। একটা ভালো লেখা পাবার জন্য আপনার আকুতি। প্রায় জানতে চাইতেন কী বই পড়ছি, কী লিখছি।
জীবনঘাতী রোগকে দু’পয়সার পাত্তা না দিয়ে আপনার বেঁচে থাকার যে চেষ্টা-সেটা উদাহরণ হয়ে থাকল। এই যুদ্ধ শেষ হলো, এখন ঘুমাবেন শান্তিতে।
আবার দেখা হবে নিশ্চয়ই অন্য কোনো জগতে, প্রিয় ভাই, বন্ধু…
২০২৪ সালের ২ আগস্ট, এক বছর পর প্রথম আপনার গ্রামে গেলাম আপনাকে ছাড়া। জুম্মার নামাজের পর যখন কবর জিয়ারত করতে দাঁড়ালাম, এত বৃষ্টি ঝরছিল… মনে মনে আবার বললাম- আজকের জন্যই কি এই ভারী বর্ষণ অপেক্ষা করেছিল?
শেখ মোহাম্মদ জুলফিকার বিপুল : লেখক