চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট মোড়ে আজ রোববার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিউমার্কেট এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাদাঁনে গ্যাসের শেল ছোড়ে।
সরেজমিন জানা গেছে, আজ সকাল ৯টা থেকে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। এর আগে একই জায়গায় সমাবেশের ডাক দেয় আওয়ামী লীগ। এ উপলক্ষে নিউমার্কেটের আশপাশে মাইক লাগান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। সেগুলো ভাঙচুর করে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর সিটি কলেজ এলাকা থেকে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এসময় আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এরপর আন্দোলনকারীরা নিউমার্কেট ও রিয়াজউদ্দিন বাজারের আশপাশে অবস্থান নিলে তাদের ওপর গুলি, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। পরে ছত্রভঙ্গ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কদমতলী, এনায়েত বাজার ও কোতোয়ালীতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে সেসব এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সংঘর্ষে আহত ১০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন। এছাড়া নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে দুই ছাত্রীসহ পাঁচজনকে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামে গণপরিবহন চলাচল কমে গেছে। আজ রোববার সকালে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যানবাহন ও যাত্রী ছিল হাতে গোনা।
নগরীর কাজীর দেউড়ি, মেহেদীবাগ, প্রবর্তক, দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, জিইসি, কর্নেলহাট, আগ্রাবাদ, বায়েজিদ, এ কে খান, অলংকারসহ বিভিন্ন এলাকায় বাস, সিএনজি ও মিনিবাসের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। যাত্রীশূন্য সড়কগুলো ছিল অনেকটা ফাঁকা। তবে কিছু অফিসগামী মানুষ রাস্তায় দেখা গেছে।
অলংকার ও এ কে খানে দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীশূন্যতার পাশাপাশি বেশিরভাগ কাউন্টারের দরজা ছিল অর্ধেক নামানো। চট্টগ্রাম থেকে দক্ষিণের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মোহাম্মদ মুছা বলেন, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় সড়ক অবরোধ করার কারণে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার জেলায় বাস চলাচল করছে না বললেই চলে।
বিচ্ছিন্নভাবে দু-একটি ছোট আকারের যান চলাচল করলেও যাত্রী নেই বললেই চলে। বাসের পাশাপাশি ট্রেন চলাচলও বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম থেকে অন্য কোনো জেলায় যাওয়ার উপায় নেই।