ঢাকা : বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সর্বশেষ তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) ১৫.৯৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে জুন শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মঙ্গলবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ গত বছরের জুনের তুলনায় ৫৫ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা বা ৩৫.৪৭ শতাংশ বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক জানিয়েছেন, জুন পর্যন্ত সময়ে শ্রেণিকৃত ঋণের হার দাঁড়িয়েছে মোট ঋণের ১২.৫৬ শতাংশে। চলতি বছর মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ১১.১১ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৯ শতাংশ।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যে তথ্য দেয়, বাস্তবে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বেশি। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর প্রকৃত খেলাপি ঋণের তথ্য বের করে ঋণখেলাপিদের শাস্তির আওতায় আনতে পদক্ষেপ নেবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়েই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৮৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। তার আগের গভর্নর ফজলে কবিরের দুই মেয়াদে খেলাপি ঋণ বেড়েছিল ৬৫ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা।
বরাবরের মতো এবারও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেশি। এসব ব্যাংকে মোট খেলাপি ১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা, যা মোট খেলাপি ঋণের ৩২.৭৭ শতাংশ।
অপরদিকে বেসরকারি ব্যাংকে মোট খেলাপি হয়েছে ৯৯ হাজার ৯২১ কোটি টাকার ঋণ, যা ৭.৯৪ শতাংশ। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকে ৩ হাজার ২২৯ কোটি টাকা বা ৪.৭৪ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়েছে। বিশেষায়িত ব্যাংকে এর পরিমাণ ৫ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা বা ১৩.১১ শতাংশ।