নজরুল কবির দীপু : ক্ষমতার পরিবর্তনের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অকার্যকারিতার কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মাঠে নেমে আইনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে। তারা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, মেগা প্রকল্প এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করছে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করছে, সন্ত্রাসী ও ডাকাত গ্রেপ্তার করছে এবং পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছে। এছাড়াও, গুজব প্রতিরোধে ও পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় তারা কাজ করছে।
সেনাবাহিনীর এই প্রচেষ্টায় সারাদেশে অস্থিতিশীলতা কমে জনমনে স্বস্তি ফিরেছে এবং অপরাধীরা ভয়ে তটস্থ। সেনাবাহিনী তথ্য সংগ্রহ করে বড় ধরনের অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে এবং জনগণের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ক্যাম্প স্থাপন করছে। সেনাবাহিনীর এই কার্যক্রম দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং জনগণের নিরাপত্তা বিধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সর্বশেষ কক্সবাজারের চকরিয়ায় সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ারের হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনায় সেনাবাহিনীর দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ, বিশেষ করে অপরাধীদের আটক ও আইনের আওতায় আনা, সেনাবাহিনীর শক্তি ও দক্ষতার প্রমাণ।
সেনাবাহিনীর এই দ্রুত সাফল্য জনগণের আস্থা আরও বাড়িয়েছে। তাদের নিরলস অভিযানে ছয় অপরাধী আটক ও অস্ত্র উদ্ধার এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের ষড়যন্ত্র উন্মোচন করেছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, জড়িত সকলকে শাস্তির আওতায় আনতে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সেনাবাহিনীর দায়িত্ব শুধু সীমান্ত রক্ষা নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও। তানজিম হত্যার পর তাদের দ্রুত পদক্ষেপ যেকোনো অপরাধ দমনে তাদের প্রস্তুতির প্রমাণ।
এই হত্যাকাণ্ড জাতির জন্য বেদনাদায়ক হলেও, সেনাবাহিনী তাদের দায়িত্ব পালনে অটল থেকে বিচার নিশ্চিত করছে। জনগণের আস্থা অর্জন করে সেনাবাহিনী ভবিষ্যতে দেশের সুরক্ষা ও শান্তি রক্ষায় আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার দেশের সুরক্ষায় নিজের জীবন উৎসর্গ করা একজন সাহসী ও আদর্শবান সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর আত্মত্যাগ সেনাবাহিনী তথা সমগ্র জাতির জন্য গর্বের। তানজিমের মতো বীর সেনাদের আত্মত্যাগ দেশপ্রেম ও সাহসিকতার প্রতীক হয়ে চিরকাল জনগণের হৃদয়ে থাকবে।
তানজিমের হত্যাকারীদের আটকের মাধ্যমে সেনাবাহিনী একটি দৃঢ় বার্তা দিয়েছে – বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো অপরাধ দমনে সদা প্রস্তুত। তানজিমের আত্মত্যাগ জাতিকে আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে, দেশের নিরাপত্তার জন্য যারা জীবন উৎসর্গ করেন তারা চিরদিন আমাদের গর্বের প্রতীক হয়ে থাকবেন।
সেনাবাহিনীর এ ধরনের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ জনগণের মনে আশা জাগিয়েছে যে, কোনো অপরাধই শাস্তি পাওয়া থেকে বাদ যাবে না। সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাবে এবং আইনের প্রতি মানুষের আস্থা আরও দৃঢ় হবে।
চকরিয়ায় সেনাবাহিনীর চিরুনি অভিযান কেবল অপরাধীদের আটকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি প্রমাণ করে যে রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর। তানজিম সারোয়ার হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনীর দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও একইভাবে দ্রুত সাড়া দিতে উৎসাহিত করবে।
এ ধরনের অভিযানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী কেবল অপরাধ দমনই করে না, জনগণের আস্থা অর্জন করে এবং সমাজে অপরাধের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সেনাবাহিনীর নিরলস প্রচেষ্টা দেখে সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রের প্রতি তাদের দায়িত্ব অনুভব করে।
সেনাবাহিনীর এ ধরনের পদক্ষেপ অপরাধীদের জন্য কঠোর সতর্কবার্তা যে, কোনো অপরাধই শাস্তি পাওয়া থেকে রেহাই পাবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিশেষত সেনাবাহিনী, আধুনিক ও প্রযুক্তিভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহার করে অপরাধ দমনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
সেনাবাহিনীর চিরুনি অভিযানের দক্ষতা ও তৎপরতা অন্যান্য বাহিনীর জন্য দৃষ্টান্ত। এটি সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বিত কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা মনে করিয়ে দেয়। ভবিষ্যতে উন্নত প্রযুক্তি ও নজরদারি ব্যবস্থার মাধ্যমে অপরাধ দমনে সেনাবাহিনী অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
সেনাবাহিনীর সাহসী ও দায়িত্বশীল পদক্ষেপ তাদের প্রতি জনগণের আস্থা ও শ্রদ্ধা আরও বাড়িয়েছে। লেফটেন্যান্ট তানজিমের হত্যাকাণ্ডের পর তাদের দ্রুত ও সফল অভিযান দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষায় সেনাবাহিনীর প্রস্তুতির প্রমাণ। সেনাবাহিনীর প্রতি এই আস্থা দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জনগণ এখন সেনাবাহিনীকে কেবল বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিরোধকারী হিসেবেই দেখে না, দেশের অভ্যন্তরীণ অপরাধ দমনেও একটি কার্যকর বাহিনী হিসেবে বিবেচনা করে। সেনাবাহিনীর প্রতিটি পদক্ষেপে যে আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠা প্রকাশ পায় তা জাতির প্রতি তাদের অঙ্গীকারের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার হত্যাকাণ্ডে সেনাবাহিনীর অভিযানের সাফল্য কেবল একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনীর প্রতিজ্ঞা ও দায়িত্ববোধের প্রতিফলন। এই অভিযান কেবল অপরাধীদের আটকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের আস্থা অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক সাফল্য প্রমাণ করে যে, তারা সবসময়ই দেশের সুরক্ষায় নিবেদিত এবং জাতির জন্য নিজেদের উৎসর্গ করতে প্রস্তুত।
লেখক : ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, একুশে পত্রিকা।