চট্টগ্রাম : নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে চট্টগ্রামের খুলশি থানা থেকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নগরীর খুলশী থানার আব্দুল মালেক লেইন থেকে র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. শরীফ-উল-আলম মঙ্গলবার রাত ১২টার পর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন যে, একরামুলকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. খোকন (১৭) নামে একজন পরিবহন শ্রমিকের হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের বিশেষ ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তারের সময় একরামুলের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নগদ সহ বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে।
নোয়াখালী সদর ও সুবর্নচর উপজেলার মিলিত নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম সরকারের পতনের কয়েকদিন আগে থেকেই বিভিন্ন অভিযোগের সম্মুখীন হচ্ছিলেন। স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্র স্থাপনের অভিযোগ জানিয়েছে। সংসদ সদস্য হওয়ার পর তার স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলী নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং তার ছেলে শাবাব করিম চৌধুরী সুবর্নচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া তার ভাতিজা জহিরুল হক রায়হান কবিরহাট পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে যে, একরামুলের নেতৃত্বে তার পরিবারের অন্তত এক ডজন সদস্যকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
র্যাব-৭ এর মো. শরীফ-উল-আলম বলেন, “২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি-জামায়াতের ডাকে সারা দেশব্যাপী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা হরতালে সোনাপুর-মাইজদী সড়কের দত্তের হাট এলাকায় হরতাল পক্ষের লোকজনের মিছিলে গুলি চালিয়ে পরিবহন শ্রমিক মো. খোকন (১৭) নিহত হন। এ ঘটনায় খোকনের বাবা মজিবুল হক নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানায় একরামুলসহ ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-২৫০ জনকে আসামি করে গত ৮ সেপ্টেম্বর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।”
মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে এবং র্যাব-৭ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একরামুলের অবস্থান নির্ধারণ করে খুলশীতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
শরীফ-উল-আলম আরও বলেন, “তার বিরুদ্ধে নোয়াখালীর কবিরহাট থানায় অস্ত্র আইন সম্পর্কিত একটি, সুধারাম থানায় একটি হত্যা ও একটি বিস্ফোরক আইন সম্পর্কিত মামলা, সোনাইমুড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা এবং ঢাকার আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে। এই পাঁচটি মামলার অভিযোগ ২০ অগাস্ট থেকে শুরু করে গত সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন সময়ে দায়ের হয়েছে।”
গ্রেপ্তারের সময় একরামুলের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, ১৬,২০০ ডলার এবং ২,১২৪ সিঙ্গাপুরি ডলার জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর একরামুলকে খুলশী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং নোয়াখালী জেলার সুধারাম মডেল থানায় মামলা সংক্রান্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো হবে।