বহদ্দারহাটে সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল: নবীজির আদর্শে জীবন গঠনের আহ্বান

চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট চত্বরে সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল
চট্টগ্রাম : নগরের বহদ্দারহাট চত্বরে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ৮নং শুলকবহর ওয়ার্ড শাখার আয়োজনে এই মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক হুইপ ও জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগর আমীর শাহজাহান চৌধুরী।

মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে আল্লামা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী শুক্রবার বাদ মাগরিব কুরআনের আলোকে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জীবনাদর্শ নিয়ে বিশেষ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এর জীবন কেবলমাত্র উপদেশ নয়, বরং মানবতার মুক্তির বার্তা। তিনি ছিলেন একজন পরিপূর্ণ আদর্শ ব্যক্তি, যার জীবনের প্রতিটি দিক থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।”

জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগর আমীর শাহজাহান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) কে আদর্শ হিসেবে পাঠিয়েছেন, এবং আমরা তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের জীবনকে গড়ে তুলতে পারি। নবী (সা.) এর চরিত্র ও শিক্ষা মানবজাতির জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত।”

প্রধান আলোচক মাওলানা মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন হেলালী বলেন, “নবী (সা.) এর জীবনের প্রতিটি ঘটনা আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। তাঁর দয়া, ক্ষমা, ও সহিষ্ণুতা আমাদের জীবনে অনুসরণ করতে হবে। এসব ভালো গুণাবলী আমাদের মধ্যে থাকা উচিত।”

প্রধান ওয়ায়েজ মাওলানা মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন খাকী বলেন, “নবী করীম (সা.) ছিলেন আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও অবিচল আস্থার অধিকারী। তাঁর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন করেছেন এবং সকল কাজে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেছেন।”

বিশেষ অতিথি জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগর সহ সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, “নবী (সা.) এর জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। আজকের যুগে, আমরা যদি নবী (সা.) এর আদর্শ মেনে চলি, তাহলে আমরা সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে পারব।”

বিশেষ অতিথি জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শামছুজ্জামান হেলালী বলেন, “নবীজি (সা.) সকল মানুষের সাথে সদাচরণ করতেন। তিনি ছিলেন দয়ালু, ক্ষমাশীল এবং সহানুভূতিশীল। তিনি সকলের সাথে ন্যায়বিচার করতেন এবং কারো প্রতি অবিচার করতেন না।”

জামায়াতের পাঁচলাইশ থানা আমীর ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল হাছান রুমী বলেন, “নবীজি (সা.) ছিলেন অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও সহিষ্ণু। তিনি তাঁর শত্রুদেরও ক্ষমা করে দিতেন এবং তাদের সাথে সদাচরণ করতেন। নবী করীম (সা.) সর্বদা জ্ঞান অর্জনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি বলেছেন, “জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর ফরজ।”

সভাপতির বক্তব্যে শুলকবহর ওয়ার্ড জামায়াতের আমীর মাওলানা মোহাম্মদ আবদুর রহীম বলেন, নবী করীম (সা.) এর জীবন আমাদের জন্য আদর্শ। আমরা যদি তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করি এবং তাঁর আদর্শ অনুসরণ করি, তাহলে আমরা এই পৃথিবীতে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবো এবং পরকালে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবো।

মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন মাওলানা আবদুল মুত্তালিব আল-হুসাইনী, মাওলানা মুহসিন আল-হোসাইনী এবং মাওলানা শামছুল ইসলাম হাকেমী। বক্তারা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জীবন এবং তাঁর মানবতার শিক্ষা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।

আয়োজকরা জানান, এই ধরনের মাহফিলের মাধ্যমে মানুষকে ইসলামের শান্তির বার্তা এবং নবী (সা.) এর আদর্শ প্রচার করা হয়, যা সকলের জীবনকে আলোকিত করতে পারে।

এই মাহফিলের বিশেষত্ব ছিল নবী মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনী এবং তাঁর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে সমাজ ও জীবন গঠনের গুরুত্ব বোঝানো। অনুষ্ঠানটি সবার মধ্যে ধর্মীয় জ্ঞান ও অনুপ্রেরণা ছড়িয়ে দেয় এবং উপস্থিত মুসলিম উম্মাহ নবী (সা.) এর দৃষ্টান্ত অনুসরণের জন্য উদ্বুদ্ধ হন।