শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১

মহাসড়কে তিন চাকার অবৈধ যানে ৬৬% মৃত্যু

প্রকাশিতঃ ২২ অক্টোবর ২০২৪ | ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন

হাটহাজারী সড়ক
ঢাকা : জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে তিন চাকার অবৈধ যানবাহনগুলোর অবাধ চলাচল সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে নছিমন, করিমন, ভটভটির পাশাপাশি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক এবং ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনার হার ক্রমেই বাড়ছে। দেশের মহাসড়কে এ ধরনের যান চলাচলে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা এবং সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কার্যকর উদ্যোগের অভাবে এই সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) এবং রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের গবেষণায় দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৬৬ শতাংশ মৃত্যুর কারণ হিসেবে তিন চাকার এসব অবৈধ যানবাহনের ভূমিকা রয়েছে। এআরআইয়ের গবেষণা অনুযায়ী, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে দুর্ঘটনার ৬১ শতাংশই ঘটে এ ধরনের যানবাহনের কারণে।

এ বছরই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭৩০ জন, যেখানে সরাসরি ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মতো যানবাহন জড়িত ছিল। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বছরের প্রথম ৯ মাসে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং নছিমন-করিমনের দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এসব যানবাহনগুলোর অবৈধভাবে মহাসড়কে চলাচলের ফলে সড়ক দুর্ঘটনার পাশাপাশি শ্রমিক অসন্তোষ এবং গণপরিবহন সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাকা জেলা ট্যাক্সি, ট্যাক্সি কার, অটোটেম্পো ও অটোরিকশাচালক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল বলেন, স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতে মানুষের জন্য ইজিবাইক ও অটোরিকশা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই হুট করে এসব যান বন্ধ করলে শ্রমিক অসন্তোষ এবং গণপরিবহন সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহনের নিষিদ্ধ করার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখলেও এটি বাস্তবায়নে প্রশাসনিক পদক্ষেপের ঘাটতি রয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা জানিয়েছেন, তিনি নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন এবং অল্প কয়েক দিনের মধ্যে মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেবেন।

এদিকে, তিন চাকার এসব যানের জন্য আলাদা সার্ভিস লেন করার দাবি দীর্ঘদিনের হলেও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিক নেতারা।

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হালিমুর রহমান বলেন, সড়কের পাশে বাজারসহ স্থাপনা সরাতে পুলিশের বড় ভূমিকা প্রয়োজন। তবে ইজিবাইক চালকদের বেপরোয়া মনোভাবকেও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি।

এই পরিস্থিতিতে, অবৈধ যানবাহনের চলাচল বন্ধ করে নিরাপদ সড়কের দাবি আবারও উঠে এসেছে।