বাঁশখালী প্রতিনিধি : বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রপুর হাজী বসরত আলী জামে মসজিদ দীর্ঘ ১০ বছর আওয়ামী লীগ নেতাদের দখলে থাকার পর পুনরায় দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মসজিদটির আসল নাম ছিল ‘হাজী বসরত আলী জামে মসজিদ’। দখলের পর নাম পরিবর্তন করে ‘চন্দ্রপুর শাহী জামে মসজিদ’ রাখা হয়েছিল। জোরপূর্বক মসজিদটি দখল করে নামে-বেনামে অর্থ আত্মসাৎ করছিলেন দখলদাররা। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সন্ত্রাসীরা আত্মগোপনে চলে গেলে মসজিদটি দাতাদের ওয়ারিশগণ দখলমুক্ত করেন এবং মসজিদের নাম পূর্বের নামে ফিরিয়ে আনেন।
অভিযোগ রয়েছে, মসজিদের জমিদাতা হাজী বসরত আলীর ওয়ারিশগণ ৫ আগস্টের পর দখলমুক্ত করে সুন্দর ও সুচারুভাবে পরিচালনা করলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ইন্ধনে মসজিদটি পুনরায় জবরদখলের চেষ্টা করা হচ্ছে।
মসজিদ দখল চেষ্টার প্রতিবাদে গত ২৯ নভেম্বর জুমার নামাজের পর মসজিদের সামনে হাজারো মুসল্লি বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
আবদুর রহমান নামে এক মুসল্লি বলেন, “চন্দ্রপুর হাজী বসরত আলী জামে মসজিদটি যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে মসজিদের নামে ১৯২৯ সালে ওয়াকফ দলিল দাতাদের ওয়ারিশগণ পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু দাতাগণের ওয়ারিশগণকে জোরপূর্বক বিতাড়িত করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বিগত ১০ বছর যাবৎ জোরপূর্বক মসজিদটি দখল করে মসজিদের বেনামে সরকারি-বেসরকারি বরাদ্দ নিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করলেও কেউ ভয়ে মুখ খুলতে পারেনি।”
নিজাম উদ্দিন নামের আরেক মুসল্লি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জবরদখল করা ব্যক্তিদের অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় দাতাদের ওয়ারিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। এসব কারণে অনেক মুসল্লি এই মসজিদ ত্যাগ করে বিভিন্ন এলাকার মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তেও বাধ্য হয়েছিল।”
জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জবরদখলকারী ব্যক্তিরা আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর দাতাদের ওয়ারিশগণ মসজিদটি সুন্দরভাবে পরিচালনা করলেও এরই মধ্যে গত ৮ নভেম্বর শুক্রবার চন্দ্রপুর এলাকার ওই সন্ত্রাসীরা বহিরাগত লোক এনে একটি জীপগাড়ি নিয়ে বিএস রেকর্ডীয় চন্দ্রপুর হাজী বসরত আলী জামে মসজিদটি আবারও দখল করার চেষ্টা করলে মুসল্লিরা তাদেরকে ধাওয়া দেয়।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার বলেন, “মসজিদ দখলের বিষয় নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”