চট্টগ্রাম : “জুলাই বিপ্লব থেকে শুরু করে শিক্ষার জন্য যত শহীদ হয়েছেন, ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমস্ত শহীদদের বদলা নেয়া হবে,” মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এ.বি.এম ফজলুল করিম।
শনিবার দুপুর ১২টায় নগরীর সাফা আর্কেডে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আয়োজিত শিক্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সেক্রেটারি অধ্যাপক সেলিম উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় এবং সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ নুর উদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক আহছানুল্লাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক এ.বি.এম ফজলুল করিম বলেন, “জাতি আজ নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেয়েছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। বাংলাদেশ হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান মিলে অসাম্প্রদায়িক দেশ, এ দেশে ধর্মবিরোধী কোনো কিছু পাঠ্যপুস্তকে থাকতে পারবে না। শিক্ষায় ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন ছিল, আছে এবং থাকবে। শহীদদের শাহাদাতের বদলা নেয়া হবে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।” এবতেদায়ী ও কিন্ডারগার্টেনের ভূমিকা কোনো অংশে প্রাথমিকের চেয়ে কম নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে শিক্ষক ফেডারেশনের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আগামী দিনের নির্বাচনে সৎ যোগ্য নেতৃত্ব বাছাইয়ে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষকদের অধিকাংশই স্বৈরাচারের দোসরদের সহযোগী। দেশকে আলোকিত করা ও আদর্শ মানুষ তৈরিতে শিক্ষক ফেডারেশন কাজ করে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে নতুনভাবে স্বৈরাচারী কায়দায় দখলদারিত্ব শুরু হয়ে গেছে। আগামীতে কোনো স্বৈরাচারকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেয়া হবে না। যারা কুরআনকে ও রাসুলকে ভালোবাসে তাদেরকে ক্ষমতায় বসালে কোনো আন্দোলন করা লাগবে না। আগামীতে ক্ষমতায় কে আসবে সেটা নির্ভর করছে শিক্ষকদের উপর। সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে সংগঠনকে মজবুত করতে পারব।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আহছান উল্লাহ বলেন, “বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন জাতির জন্য একটি নেয়ামত। শিক্ষকদের অধিকার আদায়ে এটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। ৫ আগস্টের স্বাধীনতাই হলো মূল স্বাধীনতা। শিক্ষাক্ষেত্রে সকল বৈষম্য দূর করতে হবে। এবতেদায়ীকে প্রাথমিকের মর্যাদা দিতে হবে। নতুন করে শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে। বাংলাদেশের সকল মসজিদকে কুরআন শিক্ষার আতুরঘর হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”
তিনি বলেন, “একটি জাতির মৃত্যু হয় যখন তাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়। ভারত এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার পায়তারা করছে। পাঠ্যবইয়ে সমকামিতা, অবৈধ যৌনাচার শিক্ষা দিচ্ছে। পতিত স্বৈরাচার দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইসকনকে লেলিয়ে দিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। পরিকল্পিতভাবে ইসকনকে কৃষ্ণের আদর্শ প্রচার করার জন্য পতিত স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী ৯৫ কোটি টাকা প্রদান করেছে।”
সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইআইইউসির সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. আবু বকর রফিক, বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন উত্তর জেলার প্রধান উপদেষ্টা আলাউদ্দিন সিকদার, সহ-সভাপতি অধ্যাপক নুরুন্নবী, দক্ষিণ জেলা সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, উত্তর জেলা উপদেষ্টা আব্দুল জব্বার ও রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।