
ঢাকা : নতুন এক গবেষণায় উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে যে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে এই বিলুপ্তি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।
‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনটিতে ৩০ বছরের জীববৈচিত্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ৪৫০ টিরও বেশি গবেষণাপত্রের উপর ভিত্তি করে এই গবেষণায় দেখা গেছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রাক-শিল্পবিপ্লব যুগের চেয়ে ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে প্রজাতি বিলুপ্তির হার দ্রুত গতিতে বাড়বে।
বিশেষ করে উভচর প্রাণী, পাহাড়, দ্বীপ ও মিঠা পানির বাস্তুতন্ত্রের প্রাণী এবং দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের প্রজাতি এই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে।
গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো না গেলে ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার প্রজাতি বিলুপ্ত হতে পারে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলে এই হার আরও বেড়ে যাবে।
কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী মার্ক আরবান জানিয়েছেন, প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে পারলে প্রজাতি বিলুপ্তির হার কম হবে। তবে ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই হার অনেক বেড়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, “দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের প্রজাতি সবচেয়ে বড় হুমকির মুখে। উভচর প্রাণী সবচেয়ে বেশি বিপদে, কারণ এদের জীবনচক্র আবহাওয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল এবং এরা বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন ও খরার প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল।”
এই গবেষণার ফলাফল নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক আরবান। তিনি বলেন, “নীতিনির্ধারকদের জন্য মূল বার্তা হলো, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রজাতির বিলুপ্তির সম্পর্ক এখন আরও বেশি নিশ্চিত। পদক্ষেপ না নেওয়ার এখন আর কোনো অজুহাত নেই।”
