‘মানব মুক্তির চিরন্তন পদ্ধতি মাইজভান্ডারী দর্শন’


চট্টগ্রাম : বিশ্বঅলী সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারীর ৯৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তারা মাইজভান্ডারী দর্শনকে মানব মুক্তির “চিরন্তন ও সহজবোধ্য পদ্ধতি” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির হারুয়ালছড়িতে আশেকানে হক ভান্ডারী, শোকর-এ মওলা মঞ্জিলে বিশ্বঅলীর জীবনীর উপর আলোচনা, শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, মিলাদ ও জিকির মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আল্লাহ পাঁচটি স্তম্ভের উপর ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ইসলাম সাম্য, শান্তি ও ঐক্যের ধর্ম। আল্লাহ মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু মানুষ তা ভুলে গেছে। যারা নবী করিম (স.) এর প্রতি আনুগত্য পোষণ করেছেন, তারা উপলব্ধি করেছেন যে তিনি শুধু মুহাম্মদ নন, তিনি আল্লাহর রাসূল। একজন মুসলমান হলেন এক স্রষ্টার প্রতি পূর্ণ অনুগত। সালাতের মূল উদ্দেশ্য হলো সর্বদা আল্লাহর প্রেমে নিজেকে উৎসর্গ করা। মসজিদ হলো আল্লাহকে ডাকার স্থান, আর আল্লাহ মানুষের অন্তরে বিরাজমান। মাইজভান্ডার দরবার হলো আদবের চূড়ান্ত স্থান এবং আল্লাহর ওলীগণ আল্লাহর কুদরত।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাইজভান্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় পর্ষদের সিনিয়র সদস্য, মাইজভান্ডারী লেখক ও গবেষক মুহাম্মদ শাহেদ আলী চৌধুরী মাইজভান্ডারী। সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুহাম্মদ এহসান উল্লাহ’র সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ শাহরিয়ার আসিফের সঞ্চালনায় মাহফিলটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মাদরাসা-এ গাউসুল আজম মাইজভান্ডারীর আরবি প্রভাষক মাওলানা মুহাম্মদ মুজিবুল হক মাইজভান্ডারী, কেন্দ্রীয় পর্ষদ মনোনীত ফটিকছড়ি ‘খ’ জোনের সমন্বয়ক মাস্টার মুহাম্মদ দিদারুল আলম, সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবু সাহাদাত মুহাম্মদ সায়েম সুমন, ডা. পঞ্চানন দাশগুপ্ত, ডা. বলাই কুমার আচার্য, সৈয়দ শফিউল আজিম সুমন, নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ ওমর ফারুক, মুহাম্মদ নুরুল আনোয়ার, মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান, দেশ রূপান্তর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ রফিক, বারমাসিয়া খাজা গরীবে নেওয়াজ (র.) জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ আবু তাহের মাইজভান্ডারী, স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধি এবং আশেকানে হক ভান্ডারী, শোকর-এ মওলা মঞ্জিলের সদস্যবৃন্দ ও এলাকাবাসী।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ ইব্রাহিম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জ্যোতি ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন তাওরাত, নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ সাজীদুল হাসান চৌধুরী ও মুহাম্মদ সজীবুল হাসান চৌধুরী। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, মাইজভান্ডারী দর্শন তথা সপ্তকর্ম পদ্ধতি মানবাত্মার সাথে পরম সত্ত্বার সংযোগ ঘটায়, যা মানব মুক্তির জন্য একটি চিরন্তন, সহজবোধ্য ও অপরিহার্য পদ্ধতি।

অনুষ্ঠানে ৪০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে স্কুল ব্যাগসহ এক বছরের শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়। শিক্ষক প্রতিনিধিদের শোকর-এ মওলা মনজিলের নিজস্ব প্রকাশনা ‘শোকর’ ও পঞ্জিকা উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মুহাম্মদ হান্নান হোসাইনীর পরিচালনায় জিকিরে সেমা মাহফিল ও কাওয়ালি গান পরিবেশিত হয়।