চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) তাদের পরিচালিত স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ‘স্কুল শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য কার্ড’ চালু করতে যাচ্ছে। আগামী বুধবার (২১ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন হবে। প্রাথমিকভাবে নগরীর পাঁচটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই স্বাস্থ্য কার্ডের আওতায় আসবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) টাইগারপাসে চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রস্তুতি সভায় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এই সিদ্ধান্ত জানান। তিনি বলেন, শিশুদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা শুধু অভিভাবকদের দায়িত্ব নয়, বরং প্রতিষ্ঠান ও সিটি করপোরেশনেরও দায়িত্ব।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিশুদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকাদান এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধনের মাধ্যমে একটি স্বাস্থ্যবান প্রজন্ম গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে মনে করেন মেয়র। তিনি জানান, এই স্বাস্থ্য কার্ডের বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাকেও অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি সিটি করপোরেশনের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।
মেয়র আরও জানান, এ কার্ডের মাধ্যমে প্রতিটি শিশুর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়মিতভাবে মূল্যায়ন ও নজরদারি করা সম্ভব হবে। এতে করে আগাম রোগ শনাক্তকরণ ও সচেতনতা বাড়বে। এই উদ্যোগ শুধু চসিক নয়, দেশের অন্য সিটি করপোরেশন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও একটি উদাহরণ হয়ে উঠবে।
প্রাথমিকভাবে পাথরঘাটা সিটি কর্পোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, গুল এজার বেগম সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, ইমারাতুন্নেসা কিন্ডারগার্টেন, পাঁচলাইশ কিন্ডারগার্টেন এবং কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। এ অভিজ্ঞতা থেকে পরবর্তীতে চসিকের বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। আগামী বুধবার (২১ মে) কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন স্কুলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে এই কার্যক্রমের।
হেলথ কার্ডটিতে শিক্ষার্থীর নাম, জন্ম তারিখ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, শ্রেণি, মা-বাবার নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বরসহ প্রয়োজনীয় সব পরিচিতিমূলক তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি কার্ডে পাঁচ বছর বয়স থেকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত মোট ১৪ বার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রেকর্ড রাখার সুযোগ রয়েছে। প্রতিবার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় শিক্ষার্থীর ওজন, উচ্চতা, দাঁতের অবস্থা, চোখ ও কান পরীক্ষার ফলাফল, ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য, রক্তচাপ এবং হিমোগ্লোবিন লেভেল লিপিবদ্ধ করা হবে। কার্ডের একটি পৃথক অংশে রয়েছে টিকাদান রেকর্ড, যাতে জন্মের পর থেকে নিয়মিতভাবে গ্রহণযোগ্য টিকাগুলোর তালিকা উল্লেখ করা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রণব কুমার চৌধুরী, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার প্রমুখ।