দেশজুড়ে ছড়াচ্ছে অজ্ঞাত জ্বর


কোভিড-১৯, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার মতো পরিচিত রোগের সঙ্গে লড়াই চলার মধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলায় একটি অজ্ঞাত ভাইরাল জ্বর আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, যাতে পুরো পরিবার আক্রান্ত হচ্ছে এবং হাসপাতালগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এই জ্বরে মৃত্যুর হার কম হলেও এটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে, চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে পরিবারগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং দেশের অর্থনীতি প্রতিদিন হাজার হাজার কর্মঘণ্টা হারাচ্ছে।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের কোভিড, ডেঙ্গু, টাইফয়েড ও চিকুনগুনিয়ার পরীক্ষা করাতে হচ্ছে, যার গড় খরচ সরকারি হাসপাতালে ১২০০ টাকা এবং বেসরকারি হাসপাতালে ৬০০০ টাকা।

তবে ল্যাবএইড হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ নুর মোহাম্মদের মতে, প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই এই সব পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসছে, যার ফলে চিকিৎসকরা এটিকে ‘অজ্ঞাত ভাইরাল জ্বর’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন। রোগীদের মধ্যে জয়েন্টে ব্যথা, মাথাব্যথা, সর্দি ও কাশির মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ৯০ শতাংশই এই অজানা ভাইরাল রোগে আক্রান্ত।

এই ভয়াবহ জনস্বাস্থ্য সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভাইরোলজিস্ট ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনি এই ভাইরাসের প্রকৃতি ও চরিত্র জানার জন্য সরকারি উদ্যোগে গবেষণার ওপর জোর দিয়েছেন।

তবে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক হালিমুর রশিদ জানিয়েছেন, এই ভাইরাস নিয়ে তাদের কোনো গবেষণা নেই এবং তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তিনি আরও বলেন, আপাতত এ ধরনের গবেষণা করার কোনো পরিকল্পনাও তাদের নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ মানুষ কেউই বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না। তারা মশা নিয়ন্ত্রণ, পরিকল্পিত নগরায়ণ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।