বিশ্বজুড়ে সমালোচনা, যুক্তরাষ্ট্র ‘দূরত্বে’: গাজা নিয়ে একঘরে ইসরায়েল?


গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ দখলের জন্য ইসরায়েলের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে কঠোর সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, এই পদক্ষেপ কেবল সংঘাতকে আরও তীব্র করবে এবং নতুন করে রক্তপাতের কারণ হবে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলের এই পরিকল্পনাকে একটি ‘বিপজ্জনক উত্তেজনা’ সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। সংস্থাটির মানবাধিকার প্রধান ভলকার টুর্ক এই পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লায়েন ইসরায়েলকে তার সামরিক অভিযান বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানান। ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আন্তোনিও কস্তা সতর্ক করে বলেছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে ইইউ-ইসরাইল সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন এবং কানাডাসহ পশ্চিমা দেশগুলোও এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, এই পদক্ষেপ সংঘাতের অবসান বা বন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করবে না, বরং আরও রক্তপাত ঘটাবে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো আরও কঠোর ভাষায় এর নিন্দা জানিয়েছে। হামাস এই পরিকল্পনাকে ‘একটি নতুন যুদ্ধাপরাধ’ বলে উল্লেখ করেছে এবং এর জন্য ইসরায়েলকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। হামাসের অন্যতম প্রধান সমর্থক ইরান এই পরিকল্পনাকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ‘জাতিগত নিধন’ ও ‘গণহত্যার’ অভিপ্রায় বলে মন্তব্য করেছে। সৌদি আরব, মিশর এবং জর্ডানও প্রায় একই সুরে এর নিন্দা জানিয়ে দুই-রাষ্ট্র সমাধান এবং ফিলিস্তিনি অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

চীন স্পষ্টভাবে বলেছে, গাজা উপত্যকা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য ভূখণ্ড। অন্যদিকে তুরস্ক ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার যেকোনো প্রচেষ্টা রোধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে।

ইসরায়েলের এমন পরিকল্পনার বিষয়ে বিশ্বের প্রায় সব প্রধান শক্তিধর দেশ নিন্দা জানালেও যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করেছেন এবং বাকিটা ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করবে।