
অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত এবং দাম যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করতে দুটি পৃথক কমিটি গঠন করেছে সরকার। এর মধ্যে একটি কমিটি প্রায় এক দশক আগের অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করবে এবং অন্য একটি টাস্কফোর্স সেগুলোর নতুন দাম নির্ধারণে সুপারিশ করবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১১৭টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছিল ২০১৫ সালে। এরপর দীর্ঘ সময় পার হওয়ায় এবং কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক কোম্পানি লোকসানের কারণে জরুরি কিছু ওষুধ উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়েছে, যার ফলে বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ১১ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং ১৬ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়।
কমিটির কার্যপরিধি ও গঠন
১১ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান কাজ হবে ২০১৫ সালে প্রণীত ১১৭টি ওষুধের তালিকা পর্যালোচনা করে সেটিকে যুগোপযোগী করা। এই কমিটিতে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও শিক্ষাবিদদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঔষধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার, বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের প্রতিনিধি এবং মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন আহমেদসহ আরও অনেকে।
তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর ওষুধের দাম নির্ধারণে কাজ করবে ১৬ সদস্যের টাস্কফোর্স। এই টাস্কফোর্সের প্রথম বৈঠক আগামী ১৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, “২০১৫ সালের ১১৭টি ওষুধের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। বর্তমানে বেশির ভাগ ওষুধ কোম্পানি সেগুলোর উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। তাই এবার ১১৭টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম নির্ধারণ করা হবে।”
তিনি আরও জানান, এই কাজে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও সরকারকে সহায়তা করছে। ১৯ আগস্ট টাস্কফোর্সের বৈঠকে একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, অতীতে ওষুধের দাম নির্ধারণ করা হলেও ঔষধ প্রশাসন তা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এবার একটি শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থা তৈরির ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে ।
নতুন মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে উৎপাদক, রোগী ও প্রস্তুতকারক—সকল পক্ষের স্বার্থ বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
