
সরকারি-বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ‘প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন’। অন্যদিকে বিএসসি ও ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের দাবিদাওয়া পর্যালোচনায় ১৪ সদস্যের একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
একই দিন সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের দাবি পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে ১৪ সদস্যের ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের কথা জানান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সভাপতি মো. ওয়ালি উল্লাহ বলেন, “তিন দফার ভিত্তিতে আমাদের আন্দোলন চলছিল। গতকালের সংঘাতের সুরাহা হতে হবে। আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন আমরা দেখিনি। তাই পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত সারা দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে কমপ্লিট শাটডাউন বলবৎ থাকবে।”
সরকারি চাকরিতে পদগুলো অনেক ক্ষেত্রে শুধু ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য সংরক্ষণ করা হয় এবং সেখানে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের সুযোগ দেওয়া হয় না অভিযোগ করে এটি বন্ধের দাবি জানান তিনি।
আন্দোলনকারীরা জানান, জনদুর্ভোগ এড়াতে তারা বিভাগীয় ও জাতীয় সম্মেলনের মতো কর্মসূচির পরিকল্পনা করছেন।
পর্যালোচনায় ১৪ সদস্যের ওয়ার্কিং গ্রুপ
বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করেছে সরকার। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত এই গ্রুপে প্রকৌশলী নিয়োগ দেয় এমন সরকারি সংস্থাগুলোর প্রধানদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এ সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, “বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারী ব্যক্তিদের এই সমস্যা নতুন নয়। এর সমাধান করতে গেলে সবার সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। এ কারণে ১৪ সদস্যের একটা ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে।”
তিনি জানান, ওয়ার্কিং গ্রুপটি উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনবে, আইনগত দিক পর্যালোচনা করবে এবং এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে। আন্দোলনকারীদের তাদের বক্তব্য লিখিত আকারে ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রধানের কাছে জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কমিটির প্রধান বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, “প্রকৌশলীদের তিন দফা, ডিপ্লোমাদের সাত দফা দাবি আছে। উভয় পক্ষের কথা শুনতে হবে, বুঝতে হবে। নিরপেক্ষতার সঙ্গে সমস্যার সমাধান করতে হবে। দুই পক্ষের মধ্যে যে মতপার্থক্য আছে, আমাদের কাজ হচ্ছে সেখানে সেতু নির্মাণ করা।”
তিনি জানান, ওয়ার্কিং গ্রুপ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে এবং আগামী রোববার প্রথম বৈঠকে বসবে।
সংকট নিরসনে দায়িত্বশীল পদক্ষেপের আহ্বান এনসিপির
এদিকে, বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ‘পুলিশি হামলার’ নিন্দা এবং সংকট নিরসনে সরকারকে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি বলে, “সরকারের দায়িত্বহীনতা ও অবহেলার কারণে আন্দোলন আরও ঘনীভূত হয়েছে। একটি স্বাধীন দেশে সবাই নিয়মতান্ত্রিকভাবে দাবি উত্থাপন করবে এবং সরকারের দায়িত্ব হলো সব অংশীজনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছানো।”
