
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নির্বাচনে ‘সরকারি হস্তক্ষেপে পাতানো খেলার’ অভিযোগ তুলে সরে দাঁড়িয়েছে বিএনপি সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী তামিম ইকবালের প্যানেল।
বুধবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে এই নাটকীয় সিদ্ধান্তের ফলে ‘সরকার সমর্থিত’ আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের অধিকাংশ প্রার্থীই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আজকে ক্রিকেট শতভাগ হেরে গেছে। আপনারা বড় গলায় বলেন, বাংলাদেশে ফিক্সিং বন্ধ করা লাগবে। আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করেন, পরে ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করার চিন্তা করেন।”
তিনি আরও বলেন, “কারা কারা জড়িত, তা একদম পরিষ্কার। এই নির্বাচন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জন্য একটা কালো দাগ হয়ে গেল।”
বিতর্কের সূত্রপাত
নির্বাচনের শুরু থেকেই কাউন্সিলর মনোনয়ন নিয়ে প্যানেলের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। তামিম ইকবালের প্যানেল অভিযোগ করে, বিসিবি সভাপতি ও সরকারি বিভিন্ন নির্দেশনা ব্যবহার করে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে কাউন্সিলর মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যা তাদের প্রতিপক্ষ আমিনুল ইসলাম বুলবুল সমর্থিত প্যানেলকে সুবিধা করে দিয়েছে। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা হলেও রায় তাদের বিপক্ষে যায়।
শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তা
চূড়ান্ত বিরোধ তৈরি হয় ক্লাব কাউন্সিলরশিপ নিয়ে। প্রথমে ১৪টি ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ স্থগিত করা হলেও পরে নির্বাচন কমিশন তা বহাল রাখে।
তবে ক্লাব সূত্র জানায়, এরপর তামিমের প্যানেলের কাছে ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে তিনটি পরিচালক পদ ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়, যা তারা প্রত্যাখ্যান করে। এর পরপরই বিসিবির সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ স্থগিত করলে তামিমের প্যানেল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
এই ঘটনাপ্রবাহকে ‘সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন তামিমের প্যানেলের ইসরাফিল খসরু।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত যারা
তামিমের প্যানেলের ১৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় খুলনা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগ থেকে ছয়জন পরিচালক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন আহসান ইকবাল চৌধুরী ও সাবেক ক্রিকেটার আসিফ আকবর। খুলনা থেকে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার আব্দুর রাজ্জাক ও মো. জুলফিকার আলী খান। বরিশাল থেকে মো. শাখাওয়াত হোসেন এবং সিলেট থেকে রাহাত শামস।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম।
