
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ছয়টি কলেজে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটেছে, যেখানে পাসের হার ১২ থেকে ৩৮ শতাংশের মধ্যে। এর বিপরীতে ৭৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করায় সাফল্যের ধারা বজায় রেখেছে মাস্টার নজির আহমদ ডিগ্রি কলেজ।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে উপজেলার সাতটি কলেজের মধ্যে এমন চিত্র দেখা গেছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ফলাফল উদ্বেগজনকভাবে কম হওয়ায় এবং উপজেলার একমাত্র সরকারি কলেজের ফলাফল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, মাস্টার নজির আহমদ ডিগ্রি কলেজ থেকে ২৯৬ জন পরীক্ষা দিয়ে ২৩৫ জন পাস করেছেন; পাসের হার ৭৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এই কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ জন।
অন্যদিকে, উপজেলার একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান বাঁশখালী সরকারি আলাওল ডিগ্রি কলেজে পাসের হার ৩৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। ৭৪৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন মাত্র ২৪৯ জন। এই কলেজের ফলাফল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজ থেকে ৩৭৫ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন ১২৮ জন; পাসের হার ৩৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। বাঁশখালী গার্লস ডিগ্রি কলেজে ১৭৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন ৬৯ জন, পাসের হার ৩৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় কলেজে পাসের হার ৩০ দশমিক ৩২ শতাংশ; ৩৪৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন ১০৪ জন।
সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছে দুটি প্রতিষ্ঠান। পশ্চিম বাঁশখালী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজে ৬২ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১৪ জন, পাসের হার ২২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর হাজীগাঁও বরুমছড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে মাত্র ৩ জন; পাসের হার ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ।
সার্বিকভাবে বাঁশখালীর সাতটি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২ হাজার ২৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৮০২ জন পাস করেছে, পুরো উপজেলায় পাসের হার ৩৫ দশমিক ৯১ শতাংশ।
ফলাফল বিপর্যয় নিয়ে বাঁশখালী আলাওল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলে এলাহী বলেন, “এখানকার শিক্ষার্থীরা প্রান্তিক জনপদের। তাদের নিয়মিত ক্লাসে অনুপস্থিতি, অভিভাবকদের অসচেতনতা এবং শিক্ষক সংকট—এই তিনটিই বিপর্যয়ের মূল কারণ। আমরা এটাকে ব্যর্থতা না দেখে পরিবর্তনের সুযোগ হিসেবে দেখছি।”
সাফল্যের বিষয়ে মাস্টার নজির আহমদ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, “কলেজ প্রশাসন ও শিক্ষকদের কঠোর তদারকি এবং পরিচালনা পর্ষদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ আমাদের সাফল্যের মূল কারণ। আমাদের কলেজ এবার বাঁশখালীতে প্রথম এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আমরা মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বইসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকি।”
