শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২

গানে গানে মাদক গ্রহণের কথা: সন্দ্বীপের শিক্ষা কর্মকর্তার ভিডিও নিয়ে তোলপাড়

শাস্তিমূলক বদলির পর নতুন কর্মস্থলেও অসংলগ্ন আচরণের অভিযোগ
একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ২৫ অক্টোবর ২০২৫ | ৮:৩৪ পূর্বাহ্ন


খালি গায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) উদ্দেশ্য করে চিৎকার করছেন, আবার কখনও সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে গানের সুরে মাদক গ্রহণের কথা বলছেন—চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আসলাম খানের এমন দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।

ভিডিওগুলো প্রকাশের পর তার মানসিক সুস্থতা এবং দায়িত্বে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আসলাম খান সম্প্রতি বান্দরবানের থানচি থেকে শাস্তিমূলক বদলি হয়ে সন্দ্বীপে যোগদান করেছেন।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আসলাম খান খালি গায়ে তার কার্যালয়ের সামনে বসে ইউএনওকে উদ্দেশ্য করে চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন। অন্য একটি ভিডিওতে, যা স্থানীয় সাংবাদিক নওশাদ আকরাম ধারণ করেছেন, দেখা যায় আসলাম খান সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে গানের সুরে মাদক গ্রহণের কথা বলছেন।

সাংবাদিক নওশাদ আকরাম জানান, তিনি গত ২৩ অক্টোবর কিছু অভিযোগের বিষয়ে আসলাম খানের সাক্ষাৎকার নিতে গেলে তিনি প্রায় ২০ মিনিট ধরে নানা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন এবং এক পর্যায়ে মাদক নিয়ে গান ধরেন।

আসলাম খানের অতীত রেকর্ড ঘেঁটে জানা গেছে, থানচিতে কর্মরত অবস্থায় এক যুগ্ম সচিবকে গালিগালাজ করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছিল এবং সেই কারণেই তাকে সন্দ্বীপে বদলি করা হয়।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আসলাম খান ভিডিওগুলোর সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “কর্মজীবনে এটি আমার ৩২তম বদলি। ৮ থেকে ১০ বার বিভাগীয় মামলার মুখোমুখি হয়েছি। এখন এসবই আমার পরম বন্ধু।” শাস্তিমূলক বদলি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন নন বলেও জানান।

চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজ বলেছেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে লিখিত কোনো অভিযোগ পাননি। তবে খোঁজ নিয়ে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এস এম মোসলেম উদ্দিন জানান, উপজেলা পর্যায় থেকে জেলা অফিস হয়ে অভিযোগ আসলেই তারা ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওগুলো ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ‘সন্দ্বীপ সংযোগ’ নামে একটি পেজে শেয়ার করা ভিডিওতে ফছিহুল আলম নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘সন্দ্বীপ উপজেলা যেন এক পুনর্বাসন কেন্দ্র’। মোস্তফা শামীম নামে আরেকজন লেখেন, ‘শিক্ষা অফিসারের এ অবস্থা হলে, শিক্ষার কী পরিণতি হবে।’