
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া ও চীনের বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ পরিদর্শনের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এসে তদন্ত করে দেখবেন কোনো অব্যবস্থাপনা ছিল কিনা এবং তারা কারণ ও দায় নির্ধারণে সহায়তা করবেন।
এদিকে, আগুন নেভাতে প্রায় সাড়ে ২৬ ঘণ্টা সময় লাগার কারণ হিসেবে ফায়ার সার্ভিস পাঁচটি বিষয়কে চিহ্নিত করেছে: উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দাহ্য বস্তুর আধিক্য, স্টিল কাঠামোর তাপ শোষণ, অপরিষ্কার ও গাদাগাদি পরিবেশ, অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি এবং ভেতরে প্রবেশে বাধা।
ফায়ার সার্ভিসের ব্যর্থতা দেখছেন না উপদেষ্টা
আগুন নিয়ন্ত্রণে বিলম্বের অভিযোগ উঠলেও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ফায়ার সার্ভিসের কোনো ব্যর্থতা দেখছেন না। তিনি বলেন, “বিমানবন্দরে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের নিজস্ব চারটি ইউনিট এবং ২০ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের বাইরের ইউনিটগুলো চলে আসে। ফায়ার সার্ভিস ফেল করেনি।”
তিনি আরও বলেন, “গার্মেন্টস ও ধাতব পণ্য নয়, মূলত খাদ্যপণ্য বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল।” উপদেষ্টার মতে, বিমানবন্দরের বিমান পরিচালনার জন্য থাকা ফায়ার ইউনিট কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে সক্ষম।
তদন্ত কমিটি ও অন্যান্য পদক্ষেপ
এরই মধ্যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ বিভিন্ন সংস্থা তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারও জানিয়েছে, নাশকতার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিমানবন্দরের ই-গেট দ্রুত চালু করা এবং প্রবাসী কর্মীদের পাসপোর্ট ফি কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান।
এ সময় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজে আগুনের সূত্রপাত হয়। দীর্ঘ চেষ্টার পর রোববার ভোরে আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও আনসার সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
