পটিয়া ‘পানি সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা, নতুন নলকূপে নিষেধাজ্ঞা


সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনা ও জলাধার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাকে ‘পানি সংকটাপন্ন এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। এসব এলাকায় খাবার পানি ছাড়া অন্য কোনো কারণে নতুন নলকূপ স্থাপন ও ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত ২৮ অক্টোবর এ সংক্রান্ত সরকারি গেজেট প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পানি আইনের ধারা ১৭ অনুযায়ী, জলাধার বা পানি ধারক স্তরের সুরক্ষার জন্য যথাযথ অনুসন্ধানের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই এলাকাগুলোকে পানি সংকটাপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ঘোষণা অনুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া পৌরসভার ৫টি মৌজা ‘অতি উচ্চ’ এবং ৩টি মৌজা ‘উচ্চ’ পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এছাড়া উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ৭টি মৌজা ‘অতি উচ্চ’, ৯টি ইউনিয়নের ২৭টি মৌজা ‘উচ্চ’ এবং ৮টি ইউনিয়নের ৩০টি মৌজা ‘মধ্যম’ পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

পটিয়া ছাড়াও দেশের উত্তর-পশ্চিম হাইড্রোলজিক্যাল অঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার ২৫টি উপজেলার ১৫৩টি ইউনিয়নকেও বিভিন্ন মাত্রার পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

পানি সংকটাপন্ন এলাকার জন্য মন্ত্রণালয় বেশ কিছু কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে। এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে— খাবার পানি সরবরাহ ছাড়া অন্য কোনো কারণে বিদ্যমান বা নতুন নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধ রাখা এবং ভূগর্ভস্থ পানি নির্ভর শিল্প বা প্রতিষ্ঠান স্থাপন না করা।

একইসঙ্গে খাল, বিল, পুকুর, নদী তথা কোনো জলাধারের শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না এবং জলাশয়গুলো জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত করা, কোনো জলাধারের সমগ্র পানি আহরণ করে নিঃশেষ করা এবং ভূমি ও পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট হতে পারে এমন কাজ করা থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

নদী-জলাশয়ে তরল ও কঠিন অপরিশোধিত বর্জ্য নির্গমন ও দূষণ রোধ করতে হবে। পাশাপাশি, অধিক পানি নির্ভর ফসল উৎপাদন নিরুৎসাহিত করে পর্যায়ক্রমে পানি সাশ্রয়ী ফসলের আবাদ বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ পানি আইন অনুযায়ী পানি সম্পদের অগ্রাধিকার ভিত্তিক ব্যবহার অনুসরণের কথাও বলা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব নির্দেশনা প্রতিপালন বাধ্যতামূলক। এর কোনোটি লঙ্ঘন করলে তা বাংলাদেশ পানি আইন, ২০২৩ এর ধারা ২৯ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ধারা অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে।