
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলির ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার জেলার রাউজানে দুর্বৃত্তদের গুলিতে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের পাঁচ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
বুধবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার ১৪ বাগোয়ান ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কোয়েপাড়া গ্রামের চৌধুরী পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রাউজান উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ সুমনের বুকে গুলি লাগায় তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
অন্য আহতরা হলেন- বাগোয়ান ইউনিয়ন কৃষক দলের সহ-সভাপতি মো. ইসমাইল, ওই ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম চৌধুরী, ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও বিএনপি কর্মী মোহাম্মদ সোহেল। আহত সবাই বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।
রাউজান উপজেলা বিএনপি সভাপতি জসীম উদ্দিন চৌধুরী জানান, ৭ নভেম্বর ‘ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালনের প্রস্তুতি সভা শেষে রাত ৯টার দিকে ওই পাঁচ নেতা-কর্মী বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বাগোয়ান কুইয়াপাড়া চৌধুরী পাড়া এলাকায় মোটরসাইকেল ও একটি গাড়িতে করে এসে ৯ থেকে ১০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাদের ওপর অতর্কিত গুলি ছোড়ে।
জসীম উদ্দিন চৌধুরী এই হামলার জন্য প্রতিপক্ষকে দায়ী করেছেন। তিনি দাবি করেন, “উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইস্তিয়াক চৌধুরী অভি প্রকাশের নেতৃত্বে আলতাফ চৌধুরী টুটুল, জনি চৌধুরীসহ ৭ থেকে ৮ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাদেরকে গুলি করেছে।”
রাতের এ গুলির ঘটনায় পুরো কোয়েপাড়া এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. বেলায়েত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তখন কাউকে পাইনি। বর্তমানে আমরা অভিযানে আছি। কি কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, জানার চেষ্টা করছি। ঘটনায় জড়িতের আটকের চেষ্টা চলছে।”
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এর আগে এদিন সন্ধ্যায় নগরীর বায়েজিদ থানা এলাকায় চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে গুলির ঘটনায় একজন নিহত ও প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ চারজন আহত হন।
প্রসঙ্গত, রাউজানে সশস্ত্র সংঘাতের ঘটনা সম্প্রতি বেড়েছে। গত ২৫ অক্টোবর এ উপজেলায় প্রতিপক্ষের গুলিতে মো. আলমগীর আলম (৫০) নামের এক যুবদল নেতা নিহত হন। নিহত আলম রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব রাউজান এলাকার আবদুর সাত্তারের ছেলে। ওই ঘটনায় সহযোগী যুবদল কর্মী রিয়াজ (৩০) ও আকিব (২৮) নামের আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
তারও আগে গত ৭ অক্টোবর হাটহাজারীর মদুনাঘাট এলাকায় মোটরসাইকেলে করে আসা অস্ত্রধারীদের ছোড়া গুলিতে মুহাম্মদ আবদুল হাকিম (৫২) নামের রাউজানের এক বিএনপি কর্মী নিহত হন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কারণে এ অঞ্চলে ১৮ জন খুন হয়েছেন বলে জানা গেছে।
