শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২

ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরেছে ১৮৬ জনের

| প্রকাশিতঃ ১৫ জুলাই ২০১৬ | ১১:৩০ অপরাহ্ন

road accidentঢাকা: এবারের ঈদযাত্রায় সারাদেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে ১২১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৮৬ জন নিহত ও ৭৪৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনার তথ্য তুলে ধরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘প্রতি বছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত তিন বছর ধরে বিষয়টি তারা পর্যবেক্ষণ করে আসছে। এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় ঈদযাত্রা অনেকটা স্বস্তিদায়ক হলেও সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটি শুরুর দিন থেকে ঈদ শেষে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরা পর্যন্ত (১-১২ জুলাই) ১২ দিনে ১২১টি দুর্ঘটনায় ১৮৬ জন নিহত ও ৭৪৬ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে তিনটি নৌদুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন।

এসব দুর্ঘটনায় ১০ জন নিখোঁজের সংবাদ গণমাধ্যমে এসেছে। এ সময়ে রেলে কাটা পড়ে দুইজন, চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে একজনসহ মোট তিনজন নিহত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, উল্লিখিত সময়ে চট্টগ্রামে ১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, আটজন আহত হয়। ঢাকার ধামরায়ে ছয়টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত, ২৩০ জন আহত হয়। সিরাজগঞ্জে ছয়টি সড়ক দুর্ঘটনায় আটজন নিহত, ১০ জন আহত হয়। বরিশালে ১০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত, ৩৫ জন আহত হয়। টাঙ্গাইলে ৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত, ১২ জন আহত হয়। কুমিল্লায় চারটি সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত, ২১ জন আহত হয়। ময়মনসিংহে পাঁচটি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত, ৮৫ জন আহত হয়। মানিকগঞ্জে তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত, ৩৫ জন আহত হয়। নাটোরে চারটি সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত, ১৯ জন আহত হয়। মাদারীপুরে দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত, ৭০ জন আহত হয়। রংপুরে দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত হয়। কক্সবাজারে তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়। গোপালগঞ্জে চারটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়। কিশোরগঞ্জে তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত, ১০ জন আহত হয়। ঝালকাটিতে তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত, দুজন আহত হয়। পাবনায় তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত, পাঁচজন আহত হয়। মুন্সীগঞ্জে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত, ৩৫ জন আহত হয়। গাজীপুরে তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত, ২০ জন আহত হয়। গাইবান্ধায় দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়। রাজশাহীতে দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়। দিনাজপুরে তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়। নারায়ণগঞ্জে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত, ৫০ জন আহত হয়। চুয়াডাঙ্গায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়। হবিগঞ্জে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়। বগুড়ায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত, দুইজন আহত হয়। নেত্রকোনায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়। ফেনীতে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়। সিদ্ধিরগঞ্জে দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ তিনজন নিহত হয়। ফরিদপুরে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত, ১৫ জন আহত হয়। শেরপুরে দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়। সাতক্ষীরায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়। কুষ্টিয়ায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়। শরীয়তপুরে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়। লালমনিরহাটে দুইটি সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত, পাঁচজন আহত হয়। বান্দরবানে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত, দুইজন আহত হয়। লক্ষ্মীপুরে দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত, ২০ জন আহত হয়। বাগেরহাটে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়। ঢাকার আশুলিয়ায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত, ২০ জন আহত হয়। ঢাকা মহানগরীতে চারটি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়। ভোলায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন আহত হয়। বরিশালের আগৈলঝরায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়।

এদিকে নৌপথে ঢাকার সদরঘাটে লঞ্চের ধাক্কায় পল্টুন ভেঙে নদীতে পড়ে দুই শিশু নিহত হয়। চট্টগ্রামে হালদা নদীতে নৌকাডুবিতে চারজন নিহত হয়। বরিশালে লঞ্চ-স্টিমার সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত, ৮ জন আহত হয়। রেলপথে চট্টগ্রাম মিরসরাইয়ের দূর্গাপুরে রেলে কাটা পড়ে একজন নিহত হয়। ঢাকার বনানীতে ট্রেনের ধাক্কায় একজন নিহত ও ময়মনসিংহে ঈশ্বরগঞ্জে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে একজন নিহত হয়।