আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করায় সবাইকে ধন্যবাদ : প্রধানমন্ত্রী


ঢাকা: একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেন, “এই নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে বিপুলভাবে বিজয়ী করার জন্য আমি আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৫৭টি আসনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে তাদের আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৮টি।

বিপুল এই জয়ে টানা তৃতীয়বারের মত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। গত ৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে দায়িত্ব পালনের শপথও নিয়েছেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।

শেখ হাসিনা এবার তার সরকার সাজিয়েছেন মূলত নতুনদের নিয়ে; তার মন্ত্রিসভার ৪৬ সদস্যের মধ্যে অধিকাংশই নতুন।

২০০৯ সাল থেকে একটানা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে আসা শেখ হাসিনা প্রতি বছরের শুরুতে তার সরকারের বর্ষপূর্তির সময় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে আসছেন। তার এবারের ভাষণটি এল নতুন সংসদের অধিবেশন শুরুর ঠিক পাঁচ দিন আগে।

শেখ হাসিনা বলেন, “যারা নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের বিজয়ী করেছেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। যারা আমাদের ভোট দেননি, আমি তাদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল দল ও জোট এবং প্রার্থীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

সকলের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সহযোগিতায় বিশাল এ জয় সম্ভব হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সকল নেতা-কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।

সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করায় নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি জাতীয় চার-নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে। মুক্তিযোদ্ধাদের আমি সালাম জানাচ্ছি।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট হত্যাকাণ্ডের শিকার বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের কথা ‘গভীর বেদনার সঙ্গে’ স্মরণ করেন জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কথাও তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

১৯৫২ সালে ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের যে নেতাকর্মীরা নিহত হয়েছেন, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের ‘অগ্নি সন্ত্রাস এবং পেট্রোল বোমায়’ যাদের প্রাণ গেছে তাদের সবার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর এ ভাষণ রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যমগুলোতে একযোগে সম্প্রচার করা হয়।