শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভূমিমন্ত্রীর কাছে প্রত্যাশা বাড়ছেই

প্রকাশিতঃ ৮ এপ্রিল ২০১৯ | ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন

ঢাকা : ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের উদ্ধৃতি দিয়ে একুশে পত্রিকায় প্রকাশিত ‘আমি ধরলে কিন্তু ছাড়বো না, ভূমিমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি’ শিরোনামের একটি সংবাদ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

একুশে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি গত ৩১ মার্চ নিজের ফেইসবুক পেইজে শেয়ার করেছেন মন্ত্রী; একই নিউজ ভূমি মন্ত্রণালয়ের ফেইসবুক পেইজ থেকেও শেয়ার করা হয়।

হাজার হাজার মানুষ নিউজটি দেখেন, লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করেন। এতে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই বেশি দেখা যায়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভূমিমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা। মন্ত্রীর কাছে ভুক্তভোগীদের প্রত্যাশা যে বাড়ছেই- সেটা নানা কমেন্টে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় দেশের বিভিন্ন ভূমি অফিসে বিনা নোটিসে হাজির হতেন চট্টগ্রামের প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে জাবেদ। চট্টগ্রামের আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসনে তৃতীয় বারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হয়ে ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ অব্যাহত রাখার কথা বলেন তিনি।

সেদিন ভূমিমন্ত্রী বলেছিলেন, যার সাথে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই, আমি কিন্তু ওইরকম ব্যক্তি না। মাটি ও মানুষের সাথে আমার সম্পর্ক, সেটা আমার বাবারও ছিল। আমার কাছে সবাই আসতে পারে। সারাদেশ থেকে আমি অভিযোগ পাই।

‘আমি দেখি, শুনি কী অবস্থা ভূমি অফিসগুলোতে। কর্মকর্তাদের অনেক নামও চলে আসে আমার কাছে। ধরবো, সময় হলে ধরবো আমি। তবে যখন ধরবো, আর ছাড়বো না। সম্পদের হিসাব আমি নিয়ে ফেলেছি। চাট্টিখানি কথা নয়। অনেক সাংবাদিক বলেছেন, এটা কী করে সম্ভব। আমি বলেছি, করে দেখাবো। আমি করে দেখিয়েছিও।’ যোগ করেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমি ধরবো যেটা, সেটা আমার হাত থেকে ছুটতে পারবে না। আমি না ধরলে ধরবো না, ধরলে কিন্তু ছাড়বো না। এটা আমার স্টাইল। তবে আমি কাউকে হয়রানি করবো না। আমি চাই সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে, দুর্নীতি দূর করতে।’

ভূমিমন্ত্রীর উপরোক্ত কথার প্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বাসিন্দা ও দুবাই প্রবাসী জানে আলম ফেইসবুকে তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আপনি শুধু ধরতে থাকেন আর আমরা সাধারণ জনগণ ভুক্তভোগী, জুলুমবাজদের কাছে মাথা নিচু করে ভুগতে থাকি। কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। শুধু বলতে থাকেন আপনাদের সাহায্য নিতে। ৯৯৯ এর মত একটা হেল্পলাইন ব্যবস্থা করুন তখন দুর্নীতি বন্ধ হবে।

মো. সদর উদ্দিন ফেইসবুকে লিখেছেন, ইনশাআল্লাহ আপনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল মন্ত্রী হবেন এবং আমাদের দোয়া ও সমর্থন সবসময় আপনার সাথে আছে।

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হক লিখেছেন, সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই আপনার মন্ত্রণালয় অতিমাত্রায় দুর্নীতিগ্রস্ত। আপনার সময়ে বিভিন্ন অনিয়ম যদি রোধ করতে পারেন সেটা এ দেশের ইতিহাসের এক মাইলফলক হয়ে থাকবে। আল্লাহ আপনার সহায় হউন এবং আপনি কামিয়াব হউন এটাই কামনা করি।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা ভূমি অফিসকে ঘুষ-দুর্নীতি মুক্ত করে জনগণের ভোগান্তি দূর করার জন্য ভূমিমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান আব্দুর রহমান নামের একজন। সারাদেশে জাল দলিল সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন বাবুল মল্লিক।

মো. ইলিয়াছ নামের একজন লিখেছেন, ভূমিমন্ত্রী মহোদয় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যে ভাষায় কথা বলেছেন, তিনি ইচ্ছা করলে অবশ্যই পারবেন। মন্ত্রী মহোদয় চাইলেই সবকিছু সম্ভব, দুর্নীতিমুক্ত ভূমি অফিস করা সম্ভব। জনগণ আপনার সাথে থাকবে।

কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় অনিয়ম হচ্ছে উল্লেখ করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান আব্দুল্লাহ ওয়াসিম নামের একজন।

এদিকে লিপটন আহমেদ নামের একজন লিখেছেন, আপনার মতো মন্ত্রী আরো ১০ জন থাকলে এক বছরে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর হবে। আপনি দীর্ঘজীবী হোন।

ফারুক ফেইসবুকে লিখেছেন, স্যার একটু ফেনীতে আসেন। আমরা কেমন আছি দেখে যান। মনে হয় বুঝতে পেরেছেন। তাই না! সব চোর আর হারামখোর।

ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আচরণ, হয়রানিতে মানুষ অতিষ্ঠ উল্লেখ করে সিলেটের বাসিন্দা জামাল আহমেদ লিখেছেন, এবার মনে হয় কিছু একটা হবে।

যুক্তরাজ্য প্রবাসী শাহরিয়ার আহমেদ সুমন লিখেছেন, ‘স্যালুট স্যার। আশা করি আপনি ডিজিটালাইজেশনের সাথে সাথে বিভাগকে সংস্কার করবেন এবং ভূমি মন্ত্রণালয় দুর্নীতি বন্ধ করবেন।’

দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমি বিষয়ক সব অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্যত্র বদলি করার পরামর্শ দিয়েছেন মনসুর আহমেদ নামের একজন ফেইসবুক ব্যবহারকারী।

একুশে/এসআর/এটি